মধ্যপ্রাচ্যে বৈধভাবে গিয়ে অবৈধ হয়ে ফিরছেন বাংলাদেশিরা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বৈধভাবে যাওয়ার পরও কাজ না পেয়ে অবৈধ হয়ে ফিরছেন অনেক বাংলাদেশি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। ৩ থেকে ৯ লাখ টাকা খরচে সৌদি, কুয়েত, কাতার, আরব আমিরাত ও ওমানে আসছেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু কাজ না পেয়ে আবার ফেরত যেতে হচ্ছে অনেককে।
গত ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলে কাতারে। বিভিন্ন দেশের অসংখ্য শ্রমিক সে কাজে ভূমিকা রাখেন। ডিসেম্বর মাসে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বন্ধ করে দেওয়া হয় সবধরনের নির্মাণকাজ, যা এখনো পুরো চালু হয়নি। এতে বেকার হয়ে পড়েন দেশটিতে থাকা শ্রমিকরা।
কাজ চালু না হওয়ায় অনেক কোম্পানি শ্রমিক ছাঁটাই করছে। গত ৮ মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের শ্রমিকরা। অনেকের আকামার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় অবৈধ হয়ে ঘুরছেন। কাজ না থাকায় প্রতি মাসে নিজের থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাড়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
কুয়েতে ক্লিনিং ভিসায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা খরচে মাসে ৭৫ দিনার বেতনের চাকরিতে থাকা মালিক বহন করলেও খাওয়া খরচসহ যাবতীয় খরচ নিজেকে বহন করতে হয়। দেখা যায়, অনেক কোম্পানিতে ২ থেকে ৩ বছর পর চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। ফের একই কোম্পানিতে অথবা অন্য কোম্পানিতে আকামা নবায়নের খরচ জোগাড় করতে না পেরে অবৈধ হয়ে পড়ছেন বাংলাদেশিরা। পরে গ্রেপ্তার হয়ে জেল-জরিমানা দিয়ে আর ফিরতে পারবে না এই শর্তে ফেরত যাচ্ছে বাংলাদেশে।
আরব আমিরাত, সৌদি আরবে কাজের তুলনায় শ্রমিক বেশি। তবুও দালালদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে ভিজিট ভিসা ও কাজ নেই এমন ভুয়া কোম্পানির ভিসায় যাওয়ার পরে পড়ছেন বিপাকে। দালালের কথামতো কাজ না পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে অবৈধ হয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশে একই আইন, এক কোম্পানিতে এসে অন্যত্র কাজ করা অবৈধ। পরে জেল-জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফেরত যেতে হয়।
কমিউনিটির বিশিষ্টজনরা মনে করেন, দালালের প্রলোভনে না পড়ে ভিসা কেনার আগেই এর ধরন এবং সংশ্লিষ্ট দেশে কাজের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া জরুরি। পরিবেশ-পরিস্থিতির খোঁজখবর না নিয়ে চলে আসার কারণে বেশি বিপদে পড়ছেন অধিকাংশ বাংলাদেশি। তবে যাদের আত্মীয়স্বজন আছে তারা হয়তো কেউ কেউ চাকরি পাচ্ছেন। তবে মজুরি অন্য সময়ের তুলনায় কম।
এমআরএম/এএসএম