সেহরিন সেলিমকে সংবর্ধনা

ব্রিটিশ রানির ‘এমবিই’ খেতাব অর্জন করায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র, আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. সেলিমের ছেলে সেহরিন সেলিম রিপনকে সংবর্ধনা দিয়েছে জাতীয় চারনেতা পরিষদ যুক্তরাজ্য।

সম্প্রতি পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় চার নেতা পরিষদের সভাপতি শাহ ফারুক আহমদের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম শামীম এবং মহিলা সম্পাদক সেলিনা আক্তার জোসনার যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ।

সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, এমন সুন্দর একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য জাতীয় চারনেতা পরিষদকে ধন্যবাদ। ভালো কাজের জন্য যখন সন্মাননা দেওয়া হয় তখন কাজের গতি আরও বেড়ে যায়। আমাদের অনেক ভালো কাজ করতে হবে, সবাইকে খবরের কাগজের হেডলাইন না হয়ে মানুষের হৃদয়ের কাগজের হেডলাইন হতে হবে।

তিনি বলেন, রিপন কারো কাছ থেকে কোনো তকমা নিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে যায়নি, সে তার দাদা জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপটেন মনসুর আলীকে দেখেছে তিনি সারাজীবন সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন, তিনি জীবদ্দশায় নিজের জন্য কিছু করে যায়নি। তার পারিবারিক অনুপ্রেরণায় ভালো কাজ করছে আর এ ভালো কাজের জন্য ব্রিটিশ রানির দেওয়া এমবিই খেতাব পেয়েছে।

তিনি বলেন, তার এই ভালো কাজগুলো বাংলাদেশেও করতে হবে। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে সবাই তার কাছে ভালো কাজ আশা করে। সে যদি সুযোগ পায় তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নিষ্ঠাবান সৎ দেশপ্রেমিক এবং মানববান্ধব একটি পিলার আমাদের উপহার দেবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুল ইসলাম লস্কর, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিম, লন্ডন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাবুর রহমান মুজাহিদ, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফসার খান সাদেক, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সায়েদ আহমদ সাদ।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নিয়ার শামসুল আলম বাচ্চু, যুক্তরাজ্য প্রজন্ম ৭১ এর আহ্বায়ক শহীদ সন্তান বাবুল হোসেন, যুক্তরাজ্য শ্রমিক লীগের সভাপতি শামীম আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মিলন, আফজল হোসেন রানা, আহমদ হোসেন চৌধুরী নাজিম, আহমদ আলী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, খালেদ আহমদ জয়, মিজান রহমান, আসমা আলম, গাজী আব্দুর রব প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা রানির দেওয়া এমবিই খেতাব পেয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য সেহরিন সেলিম রিপনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই খেতাব পাওয়ার পর আপনার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। আপনার মতো পরিক্ষিত যোগ্য নেতা বাংলাদেশে খুব প্রয়োজন, বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনে আপনাকে রাজনীতিতে থাকতে হবে এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।

সেহরিন সেলিম রিপন বলেন, আজকের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমার হৃদয় ছুয়ে গেছে। এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। যে এমবিই খেতাবের জন্য আপনারা আমাকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন তা আমার কাছে ছিল বিস্ময়কর ব্যাপার। আমি খেতাব পাওয়ার জন্য পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহযোগিতা করিনি, সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সেবা করে যাওয়া এটা আমার পারিবারিক ঐতিহ্য।

তিনি বলেন, আমার সেবামূলক কাজের অনুপ্রেরণা ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতা। জীবন বাজি রেখে তারা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন এবং বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের বুকে আমাদের একটা পরিচয় সৃষ্টি করেছেন। এমবিই খেতাব পেয়ে আমি বাংলাদেশি পরিচয়কে আরও উজ্বল করতে পেরেছি এতেই অনেক খুশি।

‘একজন বাঙালি হিসেবে রানির কাছ থেকে এমন খেতাব পাওয়া আমার জন্য বড় পাওয়া কারণ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। এই খেতাবটি আমার কাছে অনেক সামান্য, আমার মনে হয় আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব আছে আমরা যেন আমাদের বাংলাদেশি পরিচয়কে বিশ্বের দরবারে আরো উজ্বল করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে তার কাজের মাধ্যমে আমাদের দেশ এবং বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে বিশেষ মর্যাদায় যারা উন্নীত করছেন তা আমাদের জন্য বিশাল অর্জন।

সবশেষে জাতীয় চারনেতা পরিষদের সভাপতি শাহ ফারুক আহমেদ সংবর্ধিত অতিথি সেহরিন সেলিমের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সেহরিন সেলিম রিপন বাংলাদেশের রাজনীতিতেও সক্রিয়। সম্প্রতি তিনি ব্রিটেনের রানির দেওয়া এমবিই খেতাব পাওয়ার পর থেকে তাকে নিয়ে আওয়ামী রাজনীতিতে জোর-সোরে আলোচনা শুরু হয়েছে। জাতীয় চারনেতার পরিবার থেকে তাকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা হতে পারে বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

এমআরএম/এমএস