প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান রাষ্ট্রদূতের
যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। সোমবার (১৫ আগস্ট) বাংলাদেশ দূতাবাস, লিসবন দিবসটি পালন করে।
জাতীয় শোক দিবসের মর্মের সঙ্গে সংগতি রেখে দূতাবাস প্রাঙ্গণে ব্যানার ও পোস্টার লাগানো হয়। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা সাদা-কালো পোশাক পরিধান করে যোগ দেন এবং কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
সবাই শোক দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে কর্মকর্তাদের নিয়ে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করেন।
এছাড়াও, দূতাবাসের প্রদর্শনী কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী বর্ণাঢ্য জীবনের যুগান্তকারী ঘটনাবলীর ওপর ‘আলোকচিত্রে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন’ শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শিরোনাম সংবলিত এবং কালানুক্রমিকভাবে সাজানো আলোকচিত্র সমূহ দর্শনার্থীরা আগ্রহের সঙ্গে পরিদর্শন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় এক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারী, রাজনৈতিক দল, সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা এবং ছাত্রসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন।
এ পর্বের শুরুতে রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারী ও প্রবসী বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা দূতাবাসে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার ও শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পাঠানো বাণী পাঠ করা হয়। এরপর একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকরা বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় অবদান ও তার জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর বর্বর হত্যাকাণ্ড স্মরণ করে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান বক্তব্যের শুরুতেই ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর অভিশপ্ত রাতে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নীল নকশায় শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যসহ সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ব্যক্তি মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেনি বরং তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু ঘাতকেরা বাঙালির মন থেকে যেমন বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবিকে মুছে ফেলতে পারেনি; তেমনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিরন্তন শিখাকেও নিভিয়ে দিতে পারেনি।
রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সবাইকে, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপান্তর করার কাজে সংকল্পবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত কোভিড পরবর্তীতে এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি বৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান জানান।
আলোচনা পর্ব শেষে, স্বাধীনতা-পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বিষয়ের ওপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর, বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্ব নিবেদন করা হয়।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত কবিতা আবৃত্তি করা হয়। সবশেষে, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এমআরএম/এমএস