যুক্তরাষ্ট্রে আহলে সুন্নাতের ইয়াওমুল বদর মাহফিল
যুক্তরাষ্ট্রে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উদ্যোগে তাওহীদ রেসালতভিত্তিক জীবন চেতনায় সমাজ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে মুসলিম মিল্লাতের প্রথম বিজয় দিবস পবিত্র ইয়াওমুল বদর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার বাদ আসর কোরআন তেলাওয়াত ও নাত পাঠের মাধ্যমে পবিত্র মাহফিল শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুর রহীম মাহমুদের সভাপতিত্ব মাহফিলে বক্তব্য দেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর কার্যকী সভাপতি সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, মুহাম্মদ নদের ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ওমর ফারুক।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টারা মীর মশিউর রহমান, হাসান চৌধুরী, জসিম আহমেদ ও গিয়াস আহমেদ এবং কার্যকরী সদস্যরা নাজিম উদ্দিন, নাজের উদ্দিন, মাসুদ সিরাজী, সানাউল হক, মিরাজ কাউসার, নাজমুল গণী, মহিউদ্দীন খোকন, রিমন ইসলাম, মাহফুজুর রহমান ও কৌশিক সিদ্দিকী।
বক্তারা পবিত্র ইয়াওমুল বদরের তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে মানব জীবন ঈমানী ও কুফরী ধারায় বিভক্ত। ঈমানী জীবন নূরনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন্দ্রকরে দ্বীনি জীবন; এই ঈমানী জীবনবোধের সমাজ রাষ্ট্রব্যবস্থা ‘মদীনা রাষ্ট্র’ সুরক্ষার জন্যই পবিত্র বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।
ইসলামের উপর চাপিয়ে দেয়া অসম যুদ্ধে পবিত্র আহলে বায়াত ও সাহাবোয়ে কেরামের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাওহীদ রেসালত ভিত্তিক সমাজ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষায় মুসলিম মিল্লাতের প্রথম বিজয় ঘটে পবিত্র ইয়াওমুল বদরে। এই বদর যুদ্ধের বিজয়ের ধারাবাহিকতায় এক দশকের মধ্যেই মক্কা বিজয় সংগঠিত হয়ে সারা আরব উপদ্বীপ ইসলামের বিজয়ী পতাকাতলে চলে আসে।
ইসলামের পরিপূর্ণরূপ আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরামের প্রতিষ্ঠিত সম্মিলিত খেলাফত ইমামতের মাধ্যমেই পরবর্তী দশকে তাৎকালীন দুটি পরাশক্তি রোমান সাম্রাজ্য ও পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। ইসলাম ধর্ম এশিয়া ইউরোপ ও আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে, ফলে ইসলাম মানব ইতিহাসের প্রথম একাত্ববাদী বিশ্ব ধর্ম ও বিশ্ব শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বক্তারা আরও বলেন, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের ধর্মবিরোধী পরাজিত শক্তি খারেজী-এজিদবাদ ৬১ হিজরীতে ইসলামের মূলধারাকে সমাজ-রাষ্ট্র থেকে উৎখাত করে বাতেল ফেরকা তথা উগ্রবাদের জন্ম দেয়। ফলে ইসলামের মূলধারা আহলে সুন্নাতের পথ থেকে সড়ে ইসলামের নামেই রাফেজী, খারেজী, এজিদী, নাসেবী, শিয়া, মুতাজিলা প্রমুখ বাতেল ফেরকার সৃষ্টি হয়ে মুসলিম মিল্লাতের মধ্যে ফেৎনা দ্বন্দ ও সমস্যার তৈরি করে।
১৯১৭ সালে ইসলামী ঐক্যরাষ্ট্র ওসমানী খেলাফত ধ্বংস করে ইঙ্গ-ইহুদীবাদের রাজাকার খারেজীদের এ যুগের সংস্করণ নব্যখারেজীবাদ নজদী সৌদি ওহাবীবাদ মুসলিম মিল্লাতের ঐক্য ও ধর্মের বিকৃতি অব্যহত রেখেছে। এরই ফলস্বরূপ বর্তমান বাংলাদেশে উগ্রবাদী খারেজী ওহাবীবাদের উত্থান ঘটে।
বক্তারা ইসলামের প্রকৃতধারা আহলে সুন্নাতের পতাকাতলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুনিয়া ও আখিরাতের প্রকৃত মুক্তি স্বাধীনতা ও বিজয় পেতে আমাদের সবাইকে পবিত্র বদর ওহদ কারবালার ঈমানী পক্ষ শক্তির আনুগত্যে থাকতে হবে।
বক্তারা বলেন, স্বাধীন পূর্ণাঙ্গ ঐক্যবদ্ধ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উত্থানই ধর্ম, মানবতা, দেশ ও রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে পারে। মাহফিলে চলমান করোনা পরিস্থিতি থেকে বিশ্ব মানবতাক্লে রক্ষার জন্য আল্লাহর নিকট বিশেষ দোয়া করা হয়। সালাতু সালাম ও মুনাজাত পাঠান্তে ইফতার ও তবারূক বিতরণের মাধ্যমে পবিত্র ইয়াওমুল বদর মাহফিল সমাপ্ত হয়।
এমআরএম/এএসএম