কুয়েতে ৪৫০ ভুয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত থেকে চিরতরে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এক লাখ প্রবাসীকে। শ্রমবাজারে জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা ও ভিসা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে তাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।
প্রায় ৪৫০টি ভুয়া কোম্পানির ভিসা বিক্রির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটির সরকার। এসব কোম্পানি থেকে ভিসা ক্রয় করে আসা প্রায় এক লাখ প্রবাসীকে চলতি বছরে ফিরে যেতে হবে নিজ দেশে। এছাড়া যাদের কোনো ডিগ্রি নেই বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হয়েছে তারা শুধুমাত্র এক বছরের আকামা নবায়ন করতে পারবেন।
জানা গেছে, এক বছর পরে আকামা আর নবায়ন হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিশরসহ মোট ৩১ দেশের প্রবাসীদের কুয়েত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কুয়েত সরকার।
প্রতি ১০ দিন পরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করবে। ফ্লাইট চালু হলে ছুটিতে থাকা প্রবাসীদের তিন ধাপে ফিরিয়ে আনা হবে। প্রথম ধাপে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, প্রকৌশলী। দ্বিতীয় ধাপে যাদের পরিবারের সদস্য ছুটিতে দেশে রয়েছে। সর্বশেষ অন্যান্য আকামাধারীদের।
এদিকে দেশটির ‘রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের’ সঙ্গে সমন্বয় করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ৫৫ কুয়েতি নাগরিকসহ ৫৩৫ জনকে জড়িত থাকার দায়ে তদন্তে ডেকেছে। এছাড়া কাল্পনিক কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের খোঁজে সরকারি পর্যায়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় ‘আরব টাইমস’।
এসব প্রতিষ্ঠানের অনেক কর্মী যখনই প্রকৃত অবস্থা জানতে পেরেছে তখনই তারা কুয়েত ত্যাগ করেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ নিজ দেশে লকডাউনের কারণে এখনও ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে ‘আল কাবাস ডেইলি’ জানায়, ২০১৮-১৯ দুই বছরে এ কাল্পনিক কোম্পানিগুলো প্রায় ৬৬ মিলিয়ন দিনার আয় করেছে। আরব ও এশিয়ার দেশগুলো থেকে ৩০ হাজার কর্মীকে তারা জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০ কুয়েতি দিনারের বিনিময়ে ভিসা দিয়েছে। এছাড়া ৭০ হাজার আকামার স্ট্যাম্প থেকে এসব অবৈধ ব্যবসায়ীরা ২১ মিলিয়ন দিনার আয় করেছে।
দেশটির জাতীয় দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। কোম্পানির কফিলরা (মালিক) অনলাইনে আকামা নবায়ন না করায় করোনাকালীন ছুটিতে থাকা ৭৫ হাজার প্রবাসী কুয়েত প্রবেশের বৈধতা হারিয়েছে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা মধ্যে কাটছে ছুটিতে থাকা প্রবাসীদের দিন।
কবে ফিরতে পারবেন নিজ কর্মস্থলে? কবে স্বাভাবিক হবে সবকিছু। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের উদ্বিগ্ন না হয়ে ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমআরএম/জেআইএম