মালয়েশিয়ার সেই ‘হিরো’ বিশেষ সম্মানে ভূষিত
ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছে ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া (ইউকেএম)। শুক্রবার ৩ জুলাই ‘ইউকেএময়ে’র অনুষদের ‘সংঞ্জান কেনকানা’ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
দেশটির স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদানের ক্ষেত্রে ইউকেএমের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বর্তমান স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহকে ২০১৯ সালের মেডিকেল অনুষদে এ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
সম্মাননা ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অনুষদকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এই পুরস্কার ইউকেএম’র মেডিকেল অনুষদের সকল প্রভাষকদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা ও উৎস্বর্গের স্বীকৃতি এবং এটি স্বাস্থ্যকর্মীদের শ্রেষ্ঠত্বের বহিঃপ্রকাশ’।
‘তারা বিশেষ মানব, যারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, উৎপাদনশীল, উদ্ভাবনী এবং সর্বদা প্রত্যাশার বাইরে জনগণের পক্ষে সর্বোত্তম পরিষেবা প্রদানে সচেষ্ট। তারা সর্বদা নিষ্ঠার সাথে স্বাস্থ্যসেবার গুণমানকে উন্নত করতে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। যারা এখনও স্বাস্থ্যসেবাতে রয়েছেন এবং অবসর নিয়েছেন তাদের সকলকে তিনি তার সর্বোচ্চ প্রশংসা এবং ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিকে নোভেল করোনা সংক্রমণরোধে মালয়েশিয়াজুড়ে ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহর কৌশল প্রয়োগে জাতীয় নায়কের খেতাবে ভূষিত করেছেন দেশের জনগণ। পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলা ও সুকৌশলে পরিচালনা করায় সম্প্রতি চীনের একটি টিভি স্টেশন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. নূর হিশাম আব্দুল্লাহকে অন্যতম হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
চীনা গ্লোবাল টিভি নেটওয়ার্কের (সিজিটিএন) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লড়াইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্টনি ফৌসি এবং নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অ্যাশলে ব্লুমফিল্ড-এর পাশাপাশি ডা. হিশাম শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকের একজন।
মহামারি চলাকালীন তাদের দেশবাসীর জন্য প্রদান করা তথ্যগুলো শান্ত, স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার কারণে তিনজন ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন। তাদের কেউই মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী নন তবে তিনজনই তাদের দেশের কোভিড-১৯ এর প্রতিক্রিয়া প্রকাশে নিজ দেশের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানায় সিজিটিএন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট এবং টিভিতে হার্টথ্রবস, রকস্টার এবং জাতীয় নায়ক বলা হচ্ছে তাকে। একটি অভূতপূর্ব বিশ্বব্যাপী মহামারির মধ্যে সরকার প্রতিক্রিয়া দেখাতে মন্থর হয়ে পড়ছিল, পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তিমূলক পদক্ষেপ এবং পরস্পরবিরোধী বার্তা প্রেরণ করায় ডা. ফাউসি, ডা. ব্লুমফিল্ড এবং ডা. হিশাম বিশ্বস্ত এবং আশ্বাসের উৎস হয়ে উঠেছেন।
কোভিড-১৯ মহামারি পরিচালনার জন্য চীনের একটি টিভি স্টেশন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকদের মধ্যে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক দাতুক ডা. নূর হিশাম আবদুল্লাহকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। ডা. হিশাম (৫৭) ২০১৩ সাল থেকে হেলথ ডিরেক্টর-জেনারেল হিসেবে রয়েছেন।
ডা. হিশাম, ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয় থেকে সার্জারি ও মেডিকেল ডিগ্রি অর্জন করেছেন, ১৯৮৮ সালের আগস্টে ফিরে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসাবে সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেছিলেন। তিনি এন্ডোক্রাইন শল্য চিকিৎসা করার জন্য দক্ষ এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড এবং সিডনির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তিনি এন্ডোক্রাইন সার্জারি সম্পর্কিত বহু স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং পাঠ্যপুস্তক অধ্যায়গুলিতে গবেষণা ধর্মী লেখা প্রকাশ করেছেন। ডা. হিশামের শুভাকাঙ্খীরা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও প্রশংসা করে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘মালয়েশিয়া তাকে পেয়ে ভাগ্যবান’।
এমআরএম/জেআইএম