মিশিগানে ব্যতিক্রমী রবীন্দ্র, নজরুল ও সুকান্ত জয়ন্তী
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর
মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে,
বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে করোনা মহামারির কারণে সকল সমাবেশ, জামায়েত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বন্ধ। কারোনার বন্দিশালার ক্লান্তিলগ্নে একটু সস্তির প্রত্যাশায় মিশিগানের প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যতিক্রমী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ বছর রবীন্দ্র, নজরুল, সুকান্ত জয়ন্তী অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজনে ছিলেন সমাজসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক ড. দেবাশিষ মৃধা দাদা ও চিনু মৃধা এবং বাংলা স্কুল অব মিউজিক ও স্কুলের প্রধান আকরাম হোসাইন। মিশিগানের বিভিন্ন শহর ছাড়াও কানাডা, বাংলাদেশ ও যুক্ত্ররাজ্য থেকে অনেক দর্শক ও শিল্পীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে শতাধিক প্রবাসী শিল্পী, বাংলা স্কুল অফ মিউজিকের সকল শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার, প্রবাসী কমিউনিটি নেতারা অংশ নেন। কারোনার বন্দিশালার ক্লান্তিলগ্নে অনলাইন মিলনমেলায় গল্প, কবিতা, গান, নাচ, সবই ছিল। ৩০ মে বিকেল ৫টার সময় জুম (Zoom) এর মাধ্যমে চলে এই আয়োজন। বাসায় বসে অনলাইনে অংশ নিলেও সকলের পরনে ছিল দেশি পোশাক।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিল চিনু মৃধা ও ড. দেবাশিষ মৃধা, সহযোগিতায় ছিলেন আমিতা মৃধা। অংশগ্রহণে ছিল ছোটদের মাঝে পুস্মিতা, অমিয়, প্রনবিন্দু, স্নেহা, শ্রদ্ধা, শ্রুতি, দ্বিপ্ত, অদিতি, পূর্বা, প্রজিতা, প্রমিতা, রিয়া, নন্দিতা, মৌমিতা ও অমিতা। জারা ও তার পিতা ড. নাজমুল আনোয়ার।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি ও কবিদের জীবনের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন- মোহাম্মদ শাহীন ইসলাম (রবি ঠাকুর), সাইফ সিদ্দিকী (কাজী নজরুল ইসলাম), মানবী মৃধা রুমানা রশীদ, আজমল হোসেন ও দেবাশীষ মৃধা।
বড়দের মাঝে সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন অপূর্ব কান্তি চৌধূরী, জোসনা বিশ্বাস, আয়েশা চৌধুরী রূম্পা, রতন হাওলাদার, ইলোরা হোসেইন, মিতা মান্নান, পলি আহমেদ, হেলেন ও আহসান হাবিব, ঊর্মি বাসেদ, চিনু মৃধা, আজমল হোসেন ও আকরাম হোসেন। নৃত্য পরিবেশনায় ছিলাম মা চিনু মৃধা ও মেয়ে অমিতা মৃধা।
অংশ নেয়া ড. নাজমুল আনোয়ার জানান, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে, রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী উপলক্ষ করে, এমন একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-আয়োজন সময়োপযোগী পদক্ষেপ। বহুদিন পরে সবার সাথে অনলাইনে দেখা হলো, গান- বাজনা- আবৃত্তি- আলোচনা হলো; প্রতিদিনের উদ্বেগ- উৎকণ্ঠা থেকে বেরিয়ে এসে সবাই কেমন সতেজ হলাম। এমন সাবলীল অনুষ্ঠান সঞ্চারণ, স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সবাইকে টানা তিন ঘণ্টা ভার্চুয়ালি স্ক্রিনবব্ধ করে রেখেছিল। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
আয়োজক চিনু মৃধা জানান, প্রতিবছর প্রবাসে এই মাসটাতে ফ্রি তারিখের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়ে থাকে। মিশিগানের অনেকগুলো কমিউনিটি পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্র নজরুল সুকান্ত জয়ন্তী, ঈদ, জন্মদিন আরও কত কি। আমরা আছি এখন কারোনার বন্দিশালায়, তাই বলে কি থেমে থাকবে আমাদের সংস্কৃতি চর্চা? তাই তো বাংলা স্কুল অব মিউজিকের সৌজন্যে আজকের এই আয়োজন।
এমআরএম/পিআর