যে প্রক্রিয়ায় কুয়েতে যাবেন বাংলাদেশসহ ৭ দেশের নাগরিক
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশসহ ৭ দেশের ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য সাময়িক স্থগিত করেছে কুয়েত সরকার। ফ্লাইট বন্ধ থাকায় এসব দেশের নাগরিক, যাদের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে তাদের জন্য ভিসা নবায়ন এবং দেশে যাদের ৬ মাস অবস্থান পূর্ণ হয়েছে তাদের জন্য দিকনির্দেশনা জারি করেছে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস খালিদ আল সালাহ বরাত দিয়ে আরব টাইমস বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (৯ মার্চ) সকালে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়, যেসব বিদেশি শ্রমিক কুয়েতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রবেশে বিলম্ব হয়ে আকামা মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে, তাদের কোম্পানির জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বা শোন পাশ পেপার ইমিগ্রেশন অফিসে জমা দিয়ে ৩ মাসের দহুল বা প্রবেশ আবেদন নিতে পারবে। তবে আকামার আর্টিকেল যদি ২০ হয়, সেক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে নিজ কর্মচারীর আকামা নবায়ন ও দহুলের প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
আরা জানানো হয়েছে, আবদেন ফরমটি ইমিগ্রেশন অফিসার কর্তৃক ৩ মাসের মেয়াদসহ অনুমোদন হওয়ার পর নিজ দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীর কাছে পাঠাবে। আবেদনটি প্রদর্শন করে কুয়েতে প্রবেশ করতে পারবে দেশে আটকা পড়া প্রবাসীরা, যাদের আকামা শেষ হয়েছে এবং যাদের দেশে অবস্থানের মেয়াদ ৬ মাস পূর্ণ হয়েছে।
কুয়েত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইসাম আল নাহাম ও ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক তালাল মারাফি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস রোধ ও মানব সুরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপের কারণে যেসব দেশের নাগরিকরা কুয়েতে প্রবেশ করতে পারছেন না, তাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত, বাংলাদেশ ও মিসরসহ সাত দেশের নাগরিককে কুয়েত প্রবেশে সাত দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে কুয়েত সরকার। শুধুমাত্র উল্লেখিত সাত দেশের নাগরিকরা এ সুবিধা পাবেন।
চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে কুয়েতে এখন পর্যন্ত ৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। তবে দেশটিতে এ ভাইরানে এখনও কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৫৭ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৩৬ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৫১৩ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। দেশটিতে একদিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬৩ জনে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১৭২ জনে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার। অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ১৬১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২৩৭ জন।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে তিনজন আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
এমএসএইচ/পিআর