ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

কৃতজ্ঞতা প্রকাশে দু’জনের মনোবল চাঙা হয়

মো. রাসেল আহম্মেদ | লিসবন (পর্তুগাল) | প্রকাশিত: ০৯:০৩ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ইউরোপের নয়টি দেশসহ বিশ্বের প্রায় তেরটির মতো দেশ এবং বেশকিছু বড় বড় শহর ভ্রমণ করে দেখেছি, মানুষ তাদের প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবনে অন্যের অধিকার, সম্মান ও মর্যাদার প্রতি যথেষ্ট যত্নবান। বিষয়গুলোর যেমন মৌলিক গুরুত্ব রয়েছে তার চেয়ে বেশি রয়েছে সামাজিক গুরুত্ব। সমাজে অভিবাদনমূলক এসব শব্দের চর্চার মাধ্যমে আমরা সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারি।

পশ্চিমা বিশ্বে সাধারণ সবাই সবাইকে দিনের বিভিন্ন সময়ে অভিবাদন জানায় তাদের লোকাল ভাষায়। যেমন শুভ সকাল, বিকাল বা সন্ধ্যা ইত্যাদি। তাছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিন, নানা দিবস, ধর্মীয় ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসের শুভেচ্ছা জানাতেও দেখি অহরহ। এতে করে পারষ্পরিক সম্পর্কের যেমন উন্নতি ঘটে তেমনি করে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়।

এসব অভিবাদন একে অন্যের সাথে সতস্ফুর্তভাবে আদান প্রদান করে। সকল বয়স, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ এই নিয়ম পালনের মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণ এক শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছে এখানে। আর এগুলো এখানকার বাচ্চারা যখন তিন বছরে প্রথম স্কুল যায় তখন থেকে শেখানো হয়। যা সময়ের বিবর্তনে সামাজিক একটি শৃঙ্খলায় পরিণত হয়েছে।

আমাদের বাংলা ভাষায় ও এসব অভিবাদনমূলক শব্দ সমূহ রয়েছে। কিন্তু এখনো সার্বিক অর্থে আমরা এগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ ঘটাতে পারিনি কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া। বিশেষায়িত কিছু পরিবেশ বা প্রতিষ্ঠানে আমরা এ সমস্ত অভিবাদনের প্রয়োগ লক্ষ্য করি। কিন্তু এখনো সার্বজনীন ব্যবহারে অনেক পেছনে আমরা।

আমরা মনে করি এসব উঁচু তলার মানুষের কাজ। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। আমরা যে কোন মানুষকে যে কোনো সময় অভিবাদন ও শুভেচ্ছা জানাতে পারি। তাতে দু’জনের মনোবল চাঙা হয়। পারম্পারিক বোঝাপড়া ও সৌহার্দ্য বাড়ে এবং তাতে করে ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে।

এক অপরকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশে ও আমাদের যথেষ্ট অনীহা কাজ করে। আর প্রশংসা বা উৎসাহ দিতে বা করতে তো আমরা প্রায় ভুলেই গেছি! আমাদের গতানুগতিক ধারণা যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আমি মনে হয় ছোট হয়ে যাব! ভালো কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা অন্যকে এমন কাজ বেশি বেশি করতে উদ্দীপনা প্রদান করে। ফলে সমাজে ভালো কাজের চর্চা বেড়ে যায় এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটে।

পশ্চিমা দেশে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন কম হলেও একে অপরের প্রতি দায়িত্ব ও অন্যের অধিকারের প্রতি সকলে সচেতন। সবাই সবাইকে যথেষ্ট সহযোগিতা সহমর্মিতা ও উৎসাহ উদ্দীপনা প্রদান করে।

আমাদের দেশের অনেক কিছুর ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এখন সময় হয়েছে একে অন্যকে উৎসাহ প্রদান করার। সমাজের সকল পর্যায়ে একে অপরকে অভিবাদন জানানো। এ সমস্ত বিষয়গুলো খুবই সাধারণ কিন্তু এসবের ফলাফল হয় অসাধারণ। অথবা আমরা ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ও একে অন্যকে অভিবাদন এবং শুভেচ্ছা বা শুভ কামনা জানাতে পারি।

মোটকথা হলো এসবের চর্চার মাধ্যমে একটি জয়জয়কার পরিবেশের সৃষ্টি করা যায়। যা একটি সুখী সমাজ গড়ার পরিপূরক হিসাবেও কাজ করে।

এমআরএম/এমএস

আরও পড়ুন