প্রবাসে সাংবাদিক নির্যাতন!
প্রবাসে যারা দেশের রাজনীতি করেন তাদের মধ্যে একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখা যায়। নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের একদমই সহ্য করতে পারেন না। বিশেষ করে যারা সঠিক সংবাদ পরিবেশন করেন এমন সাংবাদিকরা নেতাদের দু’চোখের বিষ।
রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সমর্থকরা দৈনিক যুগান্তর ও জাগো নিউজের ইতালি প্রতিনিধি জমির হোসেনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে বলে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
প্রবাসী সাংবাদিক নেতা জমির হোসেন ওই নেতার নাম ও ছবি সংবাদে দেয় না এমন অভিযোগ আনেন আওয়ামী লীগ নেতা। এসব বিষয়ে সাংবাদিক জমিরের সাথে ওইদিন অসৌজন্যমূলক আচরণ করে নেতাকর্মীরা। ঘটনাটি রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাস কর্মকর্তাদের সামনেই ঘটেছে বলে জানা যায়।
এর আগে সাংবাদিক জমিরের কিছু সংবাদ দূতাবাসের নজরে আসে। বিশেষ করে প্রবাসীদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন, প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ সংবাদগুলো দূতাবাসের কর্মকর্তাদের চোখে পড়ে। সংবাদ প্রকাশের ফলে প্রবাসীর সমস্যা কিছুটা লাঘব হয় বলেও জানা যায়।
এমআরপি চালু হওয়ার পরে থেকে প্রবাসীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ পাসপোর্ট জটিলতায় ভুগছিলেন। যার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি। তাদের আগের পাসপোর্টের ভুলভ্রান্তি সংশোধনের জন্য আবেদন করেই তারা সরে গেছেন। এসব সাধারণ জটিলতা নিরসনের জন্য প্রবাসীরা দীর্ঘদিন সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু কোনোভাবেই কাজ হয়নি।
সাংবাদিকরা রাষ্ট্রদূতকে বারবার এ বিষয়ে অবগত করেছেন। রাষ্ট্রদূত বরাবরই বলে এসেছেন, ঢাকায় পাসপোর্টগুলো আটকে রাখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরেও প্রবাসীরা কোনো সুষ্ঠু সমাধান পাননি।
অবশেষে ইতালির একজন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা প্রধানমন্ত্রীর এক মিটিংয়ে পাসপোর্ট প্রসঙ্গটি আনেন। এরপরে কিছুটা পানি গড়াতে শুরু করেছে। রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকও করেছেন।
প্রবাসে যারা সাংবাদিকতা করেন তাদের অধিকাংশই নির্যাতীত হন আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতাকর্মীদের কাছে। গোটা দুনিয়ার যেখানে যতো প্রবাসী সাংবাদিক আছেন তাদের প্রায় সবারই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়।
পলাশ রহমান, ইতালি থেকে/এমআরএম/পিআর