মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরবেন যেভাবে
মালয়েশিয়ায় বর্তমানে অবৈধ শ্রমিকদের দুঃসময় চলছে। কোনোভাবেই অবৈধ অভিবাসীরা আর দেশটিতে থাকতে পারবেন না। শুরু হওয়া ‘বিফোরজি’ কর্মসূচি চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবৈধ শ্রমিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর অরিজিনাল পাসপোর্ট, যাদের পাসপোর্ট নেই তাদের দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস, মালয় রিংগিত ৭০০ এবং যেকোনো বিমানের কনফার্ম একটি টিকিট দেখাতে হবে।
এ ছাড়া অভিবাসন বুথে আবেদন করার আগে তাদের নিজ নিজ দূতাবাস থেকে একটি সম্পূর্ণ শনাক্তকরণ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। সাতদিনের মধ্যে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়ার আগে তাদের ফ্লাইট টিকিটসহ আবেদনের সমস্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করবে অভিবাসন বিভাগ।
অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ হ্রাসের পাশাপাশি দফতর পরিচালনার খরচ এবং অপরাধ সংক্রমের ঝুঁকি হ্রাস করা এ কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য বলেও জানান অভিবাসন মহাপরিচালক। ১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সুযোগ পাওয়ার পরও যারা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থান নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মালয়েশিয়া থেকে অবৈধদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার (সাধারণ ক্ষমা) ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির অধীনে আত্মসমর্পণ করে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি পাওয়ার জন্য অবৈধদের নির্দিষ্ট কিছু নথি সরবরাহ করতে হবে।
বিফোরজি প্রকল্পের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র পেনিনসুলার মালয়েশিয়ার অবৈধ অভিবাসীরা এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। যারা এরই মধ্যে আটক হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এ সুযোগ কার্যকর হবে না।’
এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশত্যাগে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলেও অভিবাসন বিভাগের ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন চলছে এ অভিযান। ৩০ জুলাই অভিবাসন ও সিটি কর্পোরেশন পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হন বাংলাদেশিসহ ৫৬ জন। রাজধানী কুয়ালালামপুরের পার্শ্ববর্তী পাংছাপুরি ,আমপাং জায়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪৬ বাংলাদেশিসহ ৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আমপাং জায়া পুলিশের সহকারী কমিশনার নূর আজমি জানান, অপরাধ দমনে আমপাং জায়ার, বেরেমবাং ইনডাহ, হুলু কেলাংসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দেশের ১১১ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বাংলাদেশের ৪৬, পাকিস্তানের ৫, নেপালের ৪ এবং ইন্দোনেশিয়ার একজনকে ইমিগ্রেশন আইনের বিভিন্ন ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশত্যাগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মালয়েশিয়াজুড়ে ৮০টি কাউন্টারে একযোগে কাজ করবেন সংশ্লিষ্টরা। অবৈধ ব্যক্তিদের সরাসরি ইমিগ্রেশন অফিসে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে।
গত ১৮ জুলাই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, অবৈধ অভিবাসীদের ইমিগ্রেশন আইনের ১৯৫৯/৬৩ পাসপোর্ট আইনের ১৫৫ ও ১৫ (১) সি ৬ (১) সি আওতায় অবস্থানকারীরা এ সুযোগ পাবেন।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীর অরজিনাল পাসপোর্ট, যাদের পাসপোর্ট নেই, দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস, মালয় রিংগিত ৭০০ এবং যেকোনো বিমানের কনফার্ম একটি টিকিট দেখাতে হবে।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সিলর এ প্রতিবেদককে বলেন, ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বিফোরজি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণে রাখবে হাইকমিশন।
এ কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্তিদের জন্য হাইকমিশন ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। যাদের যে তথ্য এবং ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা দ্রুত সরবরাহ করার যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যেসব অবৈধ অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবর্তনে আগ্রহী তারা এ কর্মসূচির সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর।কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার নিউজটি আপ হবে।
এমআরএম/এমকেএইচ