মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে আগস্টেই সমাধানের আশা প্রতিমন্ত্রীর
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে আগামী আগস্টেই সমাধানের আশা করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ। মালয়েশিয়ায় ‘শোকেস বাংলাদেশ ২০১৯-গো গ্লোবাল’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ইমরান আহমদ ইতোমধ্যে পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগ দিয়ে বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত আদেশটি শুক্রবার প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। শপথ নেয়ার দিন থেকে এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্রুত বিষয়টির মীমাংসা করতে উভয় দেশের সরকার একসঙ্গে কাজ করছে। আমি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি। নতুন একটি পদ্ধতি চূড়ান্ত করা এখন সময়ের ব্যাপার। পুরনো পদ্ধতি ঠিকঠাক কাজ করছিল না বলেই নতুন পদ্ধতি করা হচ্ছে। আমরা সবাইকে নিয়েই এটা করছি। আগামী মাসে (আগস্টে) একটা সমাধানে আমরা পৌঁছে যেতে পারব।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে এবং কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস, মালয়েশিয়া সাউথ সাউথ অ্যাসোসিয়েশন ও মালয়েশিয়ার একস্টার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কোর্পোরেশনের সহযোগিতায় চতুর্থ বারের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইমরান আহমদ আশ্বস্ত করে বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের যে পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া এবার চালু হবে, তাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তি যেন বাছাই হয়, লোক পাঠানোর খরচ যেন সাশ্রয়ী হয়, কোথাও কোনো আইন যেন লঙ্ঘন না হয়- তা নিশ্চিত করা হবে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। সরকারি হিসাবে, পাঁচ লাখের বেশি নিবন্ধিত বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি এই চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয় ১০টি জনশক্তি রফতানিকারক এজেন্সিকে।
কিন্তু প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র ওই ১০ এজেন্সিকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে দুই বছরে অন্তত ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠার পর গতবছর ওই ব্যবস্থা স্থগিত করে দেশটির সরকার।
এরপর গত বছরের অগাস্টে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ জানান, বিদেশ থেকে জনশক্তি নিতে নতুন একটি পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে তার সরকার। যে নিয়ম সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য হবে এবং সব লাইসেন্সধারী এজেন্টই শ্রমিক নেয়ার সুযোগ পাবে। পুরনো পদ্ধতি স্থগিত করার সময় মালয়েশিয়ার
ভিবিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ১০ এজেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে মাথাপিছু সর্বোচ্চ দুই হাজার রিঙ্গিত খরচ হওয়ার কথা। সেখানে এজেন্টরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে তিনগুণ আদায় করছিল। জনশক্তি আমদানির নতুন একটি পদ্ধতি ঠিক করতে গতবছর একজন বিচারপতির নেতৃত্বে স্বাধীন একটি কমিটি করেছিল মালয়েশিয়া সরকার।
মধ্যস্বত্বভোগীর ফাঁদ এড়াতে সেই কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে একটি অনলাইন জব পোর্টাল খোলার সুপারিশ করা হয়। যেখানে নিয়োগকর্তারা তাদের চাহিদা জানাতে পারবেন এবং কর্মীরা আবেদন করতে পারবেন। পোর্টালের নাম হবে ‘মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্সি’। সেখানে আবেদন পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের জবাব দেয়া হবে।
জেডএ/পিআর