ভিডিও EN
  1. Home/
  2. প্রবাস

শিগগিরই উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

আহমাদুল কবির | মালয়েশিয়া | প্রকাশিত: ০৭:২২ পিএম, ১৪ মে ২০১৯

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন এবং মানবসম্পদ মন্ত্রী কুলাসেগারেনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বৈঠক করছেন। মঙ্গলবার মালয়েশিয়া সময় ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চলে বৈঠক।

আগামী ৩০ মে ফের দু’দেশের মধ্যে বৈঠক হবার কথা রয়েছে বলে দেশটির মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এদিকে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই শ্রম বাজার উন্মুক্তসহ সব প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারবো বলে আশা ব্যক্ত করেছেন দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা।

মালয়েশিয়া সরকার সূত্র থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে আমাদের সম্প্রীতির সম্পর্ক। বাংলাদেশের জন্য শ্রম বাজার উন্মুক্তসহ অবৈধ শ্রমিকদের বিষয় মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়া সফররত বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ৩য় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

Maleshia3.jpg

প্রায় ৮ মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়ায় দু’দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের অচলাবস্থা কাটাতে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়।

মালয়েশিয়ায় ১০ লাখের বেশি কর্মী কাজ করছে। গেল দেড় বছরে দেশটিতে এসেছে দুই লাখের মতো কর্মী। জি-টু-জি প্লাজ পদ্ধতিতে এই কর্মী আসলেও ১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যায় অনলাইন সিস্টেম এসপিপিএ।

কুয়ালালামপুরে মন্ত্রী আর জানান, যারা অবৈধ আছে বৈধ করে নেয়া এবং যারা দেশে যেতে চায় তাদের নামমাত্র ফি দিয়ে দেশে যাওয়ার বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মুহ. শহীদুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহিন এবং উপ-সচিব আবুল হোসেন, দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, প্রথম সচিব শ্রম মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল, প্রথম সচিব তাহমিনা ইয়াছমিনসহ সেদেশের মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Maleshia3.jpg

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা ১ হাজার ১৭৯টি। ২০১২ সালে দুই দেশ শুধু সরকারি মাধ্যমে জি-টু-জি পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে চুক্তি সই করে। ২০১৬ সালের তা পরিমার্জন করে ১০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জি-টু-জি প্লাসের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে কোনো বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। তবে এর আগে ভিসা পাওয়া কর্মীরা সেপ্টেম্বরের পরও মালয়েশিয়া গেছেন। সব মিলিয়ে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় গেছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭ জন।

গত বছরের প্রথম তিন মাসে কর্মী গেছেন ৩৮ হাজার ৮৬৫ জন। এ বছরের প্রথম তিন মাসে গেছেন মাত্র ৫৫ জন। অথচ গত বছর প্রতি মাসে গড়ে কর্মী গেছেন প্রায় ১৫ হাজার। এ হিসাবে বাজার চালু থাকলে গত ৮ মাসে নতুন করে এক লাখের বেশি কর্মী চাকরি পেতেন বলে মনে করেন শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

Maleshia3.jpg

এর আগে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে দফায় দফায় আলাপ-আলোচনা চলে। ওই সময় মালয়েশিয়ার নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের জানিয়ে দেন, মালয়েশিয়ার নতুন সরকার কোনো সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করে না।

দায়িত্ব গ্রহণের পর তারা কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী না নেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, সেখান থেকে তারা একচুলও নড়বে না বলে হাইকমিশন ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের শ্রমবাজার নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্র এখনও নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূতাবাসের এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এবার মালয়েশিয়া সরকার চাচ্ছে বাংলাদেশসহ সোর্স কান্ট্রিভুক্ত ১৫টি দেশ থেকে ইউনিফাইড সিস্টেমে শ্রমিক নিতে। একই সঙ্গে অল্প অভিবাসন খরচে এবং সরকারের তালিকাভুক্ত সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে সমানভাবে ব্যবসা করতে পারে সেটিও বৈঠকে নিশ্চিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই মন্ত্রীর এজেন্ডায় মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের অবস্থান ও তাদের বৈধতার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। বর্তমানে পুলিশ ও ইমিগ্রেশনের সাঁড়াশি অভিযানে শত শত বাংলাদেশি ধরা পড়ে দেশটির বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি রয়েছেন।

এমআরএম/এমএস

আরও পড়ুন