হাইকমিশনের বৈশাখীতে বাঙালিয়ানার স্বাদ অনুভব বিদেশিদের
প্রতিবারের মতো এবারও পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। ২৯ এপ্রিল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় হাইকমিশনের আয়োজনে হোটেল রেনিসনের হলরোমে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার সবখানেই যেন নতুন সুর। উৎসবের এ রঙ ছড়িয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ সালকে বরণ করে নিলেন প্রবাসীরা। দূতাবাসের আয়োজনে অংশ নিতে সেখানে সমবেত হনব্রুনাই, কিউবা, ইজিপ্ট, জরদান, লিসুতু, মরিসাস, মালদ্বীপ, নামিবিয়া, ভারত, নেপাল, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, সাউথ অফ্রিকা, ইতালি, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, সেনেগাল, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ ৩৮ দেশের কূটনীতিক ও পদস্থ কর্মকর্তারা।
এ ছাড়াও ছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা। কমিউনিটি ও দূতাবাসের সব শ্রেণির কর্মকর্তার পরনে ছিল রঙিন পোশাক। ডেপুটি হাইকমিশনার ওয়াহিদা আহমেদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে হাইকমিশনার বিদেশি অতিথিদের সামনে বাংলা নববর্ষের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার বিবরণ তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বাংলা বর্ষবরণের এই ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ধারণ করে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং উন্নয়নের মহাসড়ক বেগবান করছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।’
এ উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অনেক। দেশের সুনাম বৃদ্ধির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। হাইকমিশনার বলেন, ‘সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। একবার চলে গেলে তা আর ফিরে আসে না। আপন গতিতে বয়ে চলে যাওয়াই সময়ের ধর্ম। তবুও মানবজীবনের প্রতিদিনকার বেশকিছু বাস্তবতা কিংবা ঘটনা স্থান করে নেয় ইতিহাসের পাতায়। ইতিহাস মানব জীবনে সবসময় গুরুত্ব বহন করে।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে আগত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান তিনি। বৈশাখী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের ডিফেন্স উইং প্রধান এয়ার কমডোর মো. হুমায়ূন কবির, ফার্স্ট সেক্রেটারি মাসুদ হোসাইন কমার্শিয়াল উইং মো. রাজিবুল আহসান, শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম, পাসপোর্ট/ভিসা শাখার ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. মশিউর রহমান তালুকদার, ফার্স্ট সেক্রেটারি তাহমিনা ইয়াসমিন, হাইকমিশনের শ্রম শাখার দ্বিতীয় সচিব ফরিদ আহমদসহ বিপুলসংখ্যক প্রবাসী।
শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলামের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয় এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বড়দের পাশাপাশি শিশু-শিল্পীরা নাচে-গানে মাতিয়ে তোলেন অনুষ্ঠান। বৈচিত্রময় পোশাক ও বিচিত্র রং এর সমাহারে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয় পুরো আয়োজনজুড়ে। সৌন্দর্যের ছটায় তৈরি হয় এক অনাবিল শান্তির আবহ। ভিনদেশি, ভিন্ন সংস্কৃতির প্রায় দুই শরও বেশি মানুষ এ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
অতিথিদের মুহুর্মুহু করতালিতে সিক্ত হন শিল্পীরা। বৈশাখীর আনন্দঘন এ আয়োজন পরিণত করে এক টুকরো বাংলাদেশে। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম।
এমআরএম/এমএস