আমিরাতে বাংলাদেশ স্কুল বাঁচাতে সহযোগিতা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
প্রবাসে বাংলাদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার প্রধান হাতিয়ার। বিদেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি প্রজন্ম এসব স্কুলের মাধ্যমেই আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পায়। আগামী প্রজন্মের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবান প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমায় বাংলাদেশ প্রাইভেট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ আয়োজিত প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি এসব বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রাস আল খাইমার বাংলাদেশি এ স্কুল টিকিয়ে রাখতে আরব আমিরাতের সব প্রবাসীদের এগিয়ে আসতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে বর্তমান সরকার বেশ আন্তরিক। এ প্রতিষ্ঠানেও সরকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
মঙ্গলবার স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ। স্কুলের শিক্ষার্থী জোবায়দা ও সালমার যৌথ পরিচালনায় প্রধান অতিথির সম্মানে মানপত্র পাঠ করে শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনীরুস সালেহিন, বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল দুবাইয়ের কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসেন খান, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সিআইপি মাহতাবুর রহমান নাসির, প্রকৌশলী আবু জাফর চৌধুরী, ড. রেজা খান।
এ সময় কনসুলেটের লেবার কাউন্সিলর ফাতেমা জাহানসহ বাংলাদেশ কমিউনিটি উত্তর আমিরাতের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আরব আমিরাত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা গেছে। পরে প্রতিমন্ত্রী স্কুল পরিদর্শন করেন এবং প্রতিষ্ঠান নিয়ে নানা দিক-নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, আরব আমিরাতের রাস আল-খাইমা প্রদেশে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ২৮ বছরের পুরনো এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ভবন সমস্যায় জরাজীর্ণ। আমিরাতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন আইন অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য তৈরি করতে হবে বাড়তি আয়তনের প্রাতিষ্ঠানিক ভবন।
দ্রুত এ নতুন ভবন নির্মাণ না হলে পরবাসেই ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর জীবন। নতুন আইনে যেখানে ৩৬ স্কয়ার মিটার আয়তনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের দুটো শ্রেণিকক্ষ একসঙ্গে করলেও হবে মাত্র ৩২ স্কয়ার মিটার।
এ ছাড়া ২৫ জন শিক্ষার্থীর অধিক শ্রেণিকক্ষে না রাখা ও ছেলে-মেয়ে আলাদা করে পাঠদানের বিধি-বিধানে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এসব সমস্যায় পড়ে নিয়মিত থাকা ৬৫০ জন শিক্ষার্থী থেকে ৫০ জন ইতোমধ্যে চলে গেছে অন্যত্র। তবে দুবাই ও উত্তর আমিরাত কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসাইন খান বাংলাদেশি এই প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ১ লাখ দিরহাম খরচে তৈরি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণের নকশা।
যা দেখে ইতোমধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে আমিরাতের প্রশাসন। কিন্তু ব্যয়বহুল এই ভবন নির্মাণের পর্যাপ্ত অর্থ নেই অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে। ফলে পর্যাপ্ত অর্থ যোগানে আটকে আছে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ!
এমআরএম/পিআর