মালয়েশিয়ায় কালিহাতির লড়াকু সৈনিক আব্দুল্লাহ
‘‘প্রবাসে পাড়ি জমাব কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। জীবিকার তাগিদে গৃহ-পরিজন ছেড়ে অগ্যতা পরবাসের খাতায় নাম লেখাতে হলো। প্রথমদিকে ব্যাপারটা বনবাসের মতোই লাগত। এভাবেই কেটে গেছে কয়েকটি বছর। প্রবাস জীবন শিখিয়েছে কীভাবে আশেপাশে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুকেই এড়িয়ে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যেতে হয়। নিরাশার অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়া ছেলেটা চোখের নোনাজলকে উপেক্ষা করে বলতে শিখিয়েছে, “আমি ভালো আছি মা, তোমরা ভালো আছো তো?”
উপরোক্ত এ অভিব্যক্তিটি মালয়েশিয়া প্রবাসী টাঙ্গাইলের কালিহাতির আব্দুল আজিজের ছেলে আব্দুল্লাহর (৩৬)। ১৮ বছর আগে কলিংভিসায় এসেছিলেন মালয়েশিয়ায়। পাঁচ ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি মেজ। পরিবারের হাল ধরেছেন শক্তহাতে। পরিবারের সুখের আশায় বিয়ে করেননি এখনো। মালয়েশিয়ার স্টারলাইট কোম্পানিতে কাজ করছিলেন তিনি।
প্রথম প্রথম ভালোই কাটছিল তার। বছর তিনেক পর কোম্পানি আর ভিসা লাগায়নি। পরে এ কোম্পানি থেকে চলে যান অন্যত্র। অবৈধভাবে কাজ করছিলেন। এর মধ্যে রি-হিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় ধাপে ধাপে দালালকে টাকা দিয়েও আব্দুল্লাহ বৈধ হতে পারেননি। মনের কষ্ট চেপে কাজ করছিলেন।
২০১৮ সারের নভেম্বরে পিনাং আলমায় এমওয়াই কারখানায় কাজ করার সময় তার বাম পা ভেঙে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চলে চিকিৎসাসেবা।
কয়েকদিন পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বের করে দিলে সিদ্ধান্ত নেন দেশে চলে যাওয়ার। চলে আসেন বাংলাদেশ হাইকমিশনে। ট্রাভেল পাস নিতে সহযোগিতা নেন দুই প্রবাসী কামরুল ও মোর্শেদের। তারাই তাকে দেশে পাঠানোর সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন।
বর্তমানে স্পেশাল পাস সহসা না মিললেও দূতাবাসের সহযোগিতায় চলতি মাসের ২৯ তারিখে ইমিগ্রেশন থেকে স্পেশাল পাস নিয়ে দেশে ফিরবেন তিনি। প্রবাসে নিজে কষ্টে থাকলেও পরিবারকে বুঝতে দেননি।
শুধু আব্দুল্লাহই নয় তার মতো শত শত প্রবাসী প্রতারণার শিকার হয়ে খেয়ে না খেয়ে পঙ্গু হয়ে দিনাতিপাত করছেন। এ যেন দেখার কেউ নেই।
বিএ/এমএস