মায়ের কাছে ফিরতে চান অসহায় রেমিটেন্স যোদ্ধা তানভীর
মালয়েশিয়ায় কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় এক হাত হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন তানভীর নামে এক প্রবাসী। প্রায় ১০ মাস দুর্ঘটনার শিকার তানভীর এখনও কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি তিনি। এমনকি দেশেও ফিরতে পারছেন না। ফলে মালেশিয়াতেই মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাকে।
২০১৭ সালে জিটুজি প্লাস প্রকল্পের অধীনে মালয়েশিয়া যান তানভীর। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার কানাইপুর এলাকায়।
ফ্যাক্টরিতে কর্মরত অবস্থায় মেশিনের একটি অংশে তার বাম হাত ঢুকে যায় এতে গুরুতরভাবে আহত হন তিনি।
তানভীরের পরিবারের অভিযোগ, দুর্ঘটনার ১০ মাস পার হয়ে গেলেও সান্তনা ছাড়া কিছুই মিলছে না। পরিবারে পক্ষ থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠালেও তার উত্তর মেলেনি।
আহত তানভীর বলছেন, ‘মালয়েশিয়ায় আমার তেমন কেউ নেই যে তাকে বার বার হাইকমিশনে পাঠাবো। আমি নিজেও যেতে পারি না। বস (নিয়োগকর্তা) দেশে পাঠাবে বলেছিল, কিন্তু দশ মাস হয়ে গেছে তাও পাঠাচ্ছে না। আমি আমার মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাই।’
অন্যদিকে ছেলের দুশ্চিন্তায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন তালভীরের মা। ছেলে দেশে ফিরে আসুক- এখন একটাই চাওয়া তার।
সাধারণত, কর্মস্থলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হলে চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও কর্মীর নিজ দেশে প্রেরণ করার দায় নিয়োগকর্তার ওপর বর্তালেও দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে না তানভীরের নিয়োগকর্তা।
তানভীর বলছে, পাসপোর্ট ও ভিসার কপি ছাড়া তার কাছ থেকে সকল কাগজপত্র নিয়ে গেছে তার কোম্পানি। ভিসার মেয়াদ শেষ হবে এপ্রিল মাসে। এই সময়ের মধ্যেই দেশে ফিরতে চায় তানভীর।
তানভিরের জন্য সমব্যাথী হয়ে এগিয়ে আসে সামাজিক মাধ্যম ও ইমাম হাজারি নামক প্রবাসী।
এদিকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দূতাবাস। দূতাবাস থেকে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার ফলে কোম্পানি ইমাম হাজারি চিকিৎসার খরচ দিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কোম্পানির হেফাজতে রয়েছে। ইতোমধ্যে কোম্পানি লেবার ডিপার্টমেন্টে লিখেছে।
এ বিষয়ে শুক্রবার দূতাবাসের শ্রম শাখার প্রথম সচিব মো. হেদায়েতুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, দূতাবাস থেকে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির জন্য লেবার অফিসেও যোগাযোগ অব্যাহত আছে। এটি কর্মকালীন দুর্ঘটনা। আইন অনুযায়ী তানভীর ক্ষতিপূরণ পাবে। সে প্রচেষ্টাই করছে দূতাবাস। এ নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে যে অপ্রপ্রচার চলছে তাতে বিভ্রান্ত না হবার অনুরোধ করেছে দূতাবাস।
এমবিআর/এমএস