পর্তুগালে একাত্তরের শহীদদের স্মরণ
পর্তুগালে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে ৪৮তম মহান বিজয় দিবস। নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন। ৭১ এর শহীদদের স্মরণে বিজয় দিবসে পর্তুগালের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
বিকেল ৪টায় কোরআন তেলওয়াত ও ত্রিপিটক পাঠের মধ্য দিয়ে এ দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পর্তুগাল শাখা। ৭১ এর শহীদদের স্মরণে এ সময় সমবেতভাবে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর সমবেত জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
দূতালয় প্রধান হাসান আব্দুল্লাহ তৌহিদের সঞ্চালনায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লিসবনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করে শোনান দূতালয় প্রধান হাসান আব্দুল্লাহ তৌহিদ, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতালয় কর্মকর্তা সামিউল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন সহকারী কনস্যুলার কর্মকর্তা মো. নুর উদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতালয় কর্মকর্তা মো. শাহাব উদ্দিন।
সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, যুদ্ধপরবর্তী ধ্বংসস্তুপ থেকে একটি দেশ যদি অল্প সময়ের মধ্যে এত উন্নয়ন করতে পারে, যতই বাঁধা বিপত্তি আসুক না কেন আমার বিশ্বাস ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে উন্নত দেশের কাতারে। তিনি উপস্থিত সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
প্রবীণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব রানা তাসলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের সবার মনে এই প্রেরণা থাকা উচিত যে আমি নিজেই একটি পতাকা হব, আমি নিজেই একটি মানচিত্র হব, আমি যেখানেই থাকবো বাংলাদেশ থাকবে আমার সঙ্গে। যেখানেই যাব বাংলাদেশকে তুলে ধরব, এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে।
কমিউনিটির ভেতর বক্তব্য রাখেন- পর্তুগাল আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শাহাদাত হোসাইন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে তরুণদের মধ্য থেকে অনেককেই বক্তব্যে দেন। নাহিয়ান নাসিফ, নাঈমুর রহমান, মো. রিয়ন, নাঈম হাসান পাভেল প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়াও বিজয়ের প্রথম প্রহরে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে নির্মিত স্থায়ী শহীদ মিনারে নানা বয়সী মানুষের ঢল নামে। এ সময় মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ করে এক এক করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পর্তুগাল বাংলা প্রেস ক্লাব, পর্তুগাল আওয়ামী লীগ, বৃহত্তর নোয়াখালী অ্যাসোসিয়েশন ইন পর্তুগাল, বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টসহ পর্তুগাল প্রবাসীদের নানা সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ সময় বিজয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে। বিজয় দিবসের বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করে পর্তুগাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফোরাম এবং বাংলাদেশ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব পর্তুগাল।
এ ছাড়াও পর্তুগালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পোর্তোতো বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর উদ্যোগে বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। পোর্তোতে নির্মিত স্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর নেতারা।
এমআরএম/এমকেএইচ