৩৩তম ফোবানা সম্মেলন স্মরণীয় রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি

‘আমাদের শিশু-আমাদের অহংকার’ স্লোগানে আগামী ৩০-৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর ‘ড্রামা সার্কলের আয়োজনে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হবে ফোবানা সম্মেলন ২০১৯। ৩৩তম ফোবানা সম্মেলন স্মরণীয় রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

ফোবানা কনভেনশন ২০১৯’র সার্বিক প্রস্তুতির বিষয় জানাতে শনিবার দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা-ফোবানা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ৩৩তম ফোবানা কনভেনশন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা চেয়েছে ফোবানা নেতারা।

নিউইয়র্ক সিটি সংলগ্ন লং আইল্যান্ডে নাসাউ কলিসিয়ামের বিলাসবহুল অডিটোরিয়ামে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে।

ফোবানার নির্বাহী সচিব জাকারিয়া চৌধুরী বলেছেন, একটা সময় ছিল যখন ফোবানা সম্মেলন এগিয়ে এলে দেখা যেত নানা বিভক্তি এবং মতবিভেদ। কিন্তু অত্যন্ত সুখের বিষয় এখন ফোবানা একটিই। ফোবানার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তারা সবাই সবার পরিচিত মুখ।

উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা (ফোবানা )’র ৩৩তম সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাকারিয়া চৌধুরী। তিনি নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৩২ বছরে ৩২টি ফোবানা সম্মেলন হয়েছে বিভিন্ন সিটিতে। ৩৩তম সম্মেলনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে ২৫টি স্টান্ডিং কমিটি মাঠে রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে গণমাধ্যমের সহায়তার ওপর।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয় যে, আইনগতভাবে এই কমিটি ব্যতীত অন্য কেউ ‘ফোবানা’ এবং তার লোগো ব্যবহার করতে পারবেন না। সর্বোচ্চ আইনের দেশে বেআইনি কাজটি কেউ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

উল্লেখ্য, দু’দিন আগে ফোবানা’র ব্যানারে নিউইয়র্কেই আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে একই সময়ে নিউইয়র্কে ৩ দিনব্যাপী ফোবানা কনভেনশনের ঘোষণা দেয়া হয়।

কমিউনিটির ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে ফোবানা’র পতাকাতলে জড়ো হবার আহ্বান জানান আয়োজক কমিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ফোবানা হচ্ছে উত্তর আমেরিকায় সব সংগঠনের আমব্রেলা সংগঠন। ফোবানা হচ্ছে মার্কিন আইন অনুযায়ী ৫০১ সি (৩) এর আওতায় একটি অলাভজনক কর্পোরেশন।

এ ছাড়া, ইউএস পেটেন্ট অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত একটি অর্গানাইজেশন। তাই আইনগতভাবে এ কমিটি ব্যতীত অন্য কেউ ফোবানা এবং তার লোগো ব্যবহার করতে পারবেন না।

৩৩তম ফোবানা কনভেনশনের হোস্ট কমিটির কনভেনর নার্গিস আহমেদ এবং সদস্য-সচিব আবির আলমগীর জানান, নিউইয়র্ক সিটি সংলগ্ন লং আইল্যান্ডে নাসাউ কলিসিয়ামের বিলাসবহুল অডিটোরিয়ামে একই সঙ্গে দুটি মঞ্চে অনুষ্ঠান চলবে। ৯ হাজার আসনবিশিষ্ট এ অডিটোরিয়ামের দু’দিনের ভাড়া ২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

এ ছাড়াও উদ্বোধনী দিনের পৃথক অডিটোরিয়ামে লাগবে আরো অর্ধ লক্ষাধিক ডলার। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, বস্টন, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ভার্জিনিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়াসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত রাজ্য থেকে ৮০টিরও অধিক সংগঠনের সদস্য-কর্মকর্তারা পারফর্ম করবেন। সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে সর্বত্র চলছে রিহার্সেল।

‘ড্রামা সার্কলের প্রতিষ্ঠাতা ও হোস্ট কমিটির কনভেনর নার্গিস আহমেদ এবং ফোবানা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মীর এইচ চৌধুরী প্রবাসীদের ঐক্য প্রক্রিয়ার বিষয়ে বলেন, ২০০৪ সাল থেকেই তারা নানাভাবে চেষ্টা করেছেন ফোবানাকে একত্রিত করতে। কিন্তু ‘সালিশ মানি তো তালগাছটা চাই’ মনোভাবের কারণে কতিপয় ব্যক্তি ফোবানার মূলধারার বাইরে রয়েছেন।

তারাই ঐক্যের বিপরীতে অবস্থান করছেন। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের ঐক্যের বন্ধন সুসংহত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে আরো বলেন, সচেতন প্রবাসীরা অবশ্যই ফোবানার ৩৩তম কনভেনশনে জড়ো হবেন। সেখানে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণের পাশাপাশি থাকবে মূলধারার রাজনীতিকদের সরব উপস্থিতিও।

সংবাদ সম্মেলনে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কমিউনিটির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হন। এর মধ্যে ছিলেন ফোবানার ভাইস চেয়ারপার্সন (টেক্সাস) শাহ হালিম, সাবেক চার চেয়ার পার্সন মাহাবুব রেজা রহিম (আরিজোনা), আতিকুর রহমান (ফ্লোরিডা), নাহিদ চৌধুরী মামুন (নিউজার্সি) এবং বেদারুল ইসলাম বাবলা (নিউইয়র্ক), আউস্ট্যান্ডিং মেম্বার জসীম উদ্দিন (জর্জিয়া), রবিউল করিম বেলাল (ক্যানসাস), নির্বাহী সদস্য গোলাম ফারুক ভূইয়া (নিউজার্সি), শহিদুল মল্লিক বাঁধন (লং আইল্যান্ড), নাহিদা আলী (টেক্সাস) এবং কবির কীরন (নিউজার্সি)।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হোস্ট কমিটির প্রেসিডেন্ট ড. দেলওয়ার হোসেন, চিফ কো-অর্ডিনেটর জহির মাহমুদ প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফোবানা কনভেনশনকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছে হোস্ট সংগঠন ‘ড্রামা সার্কল’ সহ সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশি প্রজন্মকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। আরও উপস্থিত ছিলেন ফোবানার ভাইস চেয়ারপার্সন (টেক্সাস) শাহ হালিম, সাবেক চার চেয়ারপার্সন মাহাবুব রেজা রহিম (আরিজোনা), আতিকুর রহমান (ফ্লোরিডা), নাহিদ চৌধুরী মামুন (নিউজার্সি) ও বেদারুল ইসলাম বাবলা (নিউইয়র্ক), মেম্বার জসীমউদ্দিন (জর্জিয়া), রবিউল করিম বেলাল (ক্যানসাস), নির্বাহী সদস্য গোলাম ফারুক ভূইয়া (নিউ জার্সি), শহিদুল মল্লিক বাঁধন (লং আইল্যান্ড), নাহিদা আলী (টেক্সাস) ও কবির কীরন (নিউজার্সি), আয়োজক কমিটির প্রেসিডেন্ট দেলওয়ার হোসেন ও চিফ কো-অর্ডিনেটর জহির মাহমুদ।

উল্লেখ্য, একই সময় ‘ফোবানা’ নামে আরো একটি সম্মেলন হবে নিউইয়কে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা ব্যানারে আয়োজিত এ সম্মেলনের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছিল অপর সংবাদ সম্মেলনটি।

এমআরএম/পিআর