দেশে ফিরতে পারবেন কি এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা?
অভাবের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে মতিয়ার রহমান পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর মালয়েশিয়ায়। নিজেই এখন দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী। জীবন সায়াহ্নে এসে একটাই আকুতি তার, দেশে কি ফেরা হবে?
মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান, পাবনার আতাইকুলা থানার সড়াডাংগী কড়ইতলা গ্রামের সামছুর রহমানের ছেলে। মালয়েশিয়ার সাবা বারনাম সরকারি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
মতিয়ার রহমানের মেয়ে পপি মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রথম যখন বাবা (মতিয়ার) মালয়েশিয়া যান, তখন সেভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না। মাঝে মধ্যে মোবাইলে কথা বলতেন। প্রায় ১০/১২ বছর মালয়েশিয়ায় থাকার পর হঠাৎ করে একদিন বাবা দেশে ফেরেন। প্রায় দুই বছর আমাদের সঙ্গে কাটান। সংসারের অভাব-অনটন দেখে আবারও মালয়েশিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আমরা সবাই নিষেধ করেছিলাম। বলেছিলাম, দেশেই কিছু করেন। আর বিদেশ যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু বাবা ফের মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন।
তিনি বলেন, ‘দালালের মাধমে অন্যের নামে পাসপোর্ট বের করেন। এরপর বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে ট্যুরিস্ট ভিসায় ২০১৮ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে পাড়ি দেন মালয়েশিয়ায়। হঠাৎ ২০ মার্চ আমাদের মোবাইলে একটি কল আসে। অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, মতিয়ারকে বাঁচাতে হলে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। অন্যথায় তাকে মেরে ফেলা হবে।’
‘এমনিতে অভাবের সংসার। ঋণের ভারে ন্যুব্জ গোটা পরিবার। এর ওপর নতুন করে এতগুলো টাকা, কোথা থেকে ম্যানেজ করবো! বাবার জন্য টাকা পাঠাতে পারিনি। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’
এরই মধ্যে কেটে যায় বেশ কয়েক মাস। হঠাৎ করে একটি অনলাইন পত্রিকায় বাবার ছবিসহ নিউজ ছাপা হয়। পরে ওই অনলাইনের সাংবাদিক মোহাম্মদ আলীর সাঙ্গে যোগাযোগ করি এবং বাবাকে দেশে পাঠাতে অনুরোধ করি। তিনি আমাদের জানান, চিকিৎসা বাবদ হাসপাতালের বিল এবং ট্রাভেল পাস ও টিকিটসহ প্রায় ১২ হাজার রিংগিত (বাংলা টাকায় প্রায় দুই লাখ ২৪ হাজার টাকা) লাগবে।
কিন্তু মতিয়ারের পরিবারের সেই সামর্থ্য নেই। প্রিয় বাবাকে ফিরে পেতে উন্মুখ মেয়ে বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
আহমাদুল কবির/এমএআর/পিআর