ফের স্বর্ণপদক পেলেন কানাডা প্রবাসী মনিরুজ্জামান
মূল্যবান ধাতু সংগ্রহ ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য ফের স্বর্ণপদক পেলেন কানাডা প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান। বুধবার মূল্যবান ধাতু ব্যবসায়ীদের সংগঠন এলবিএমএ-এর সম্মেলনে পুরস্কার তুলে দেন সংগঠনটির সিইও রুথ ক্রোয়েল। স্বর্ণ পদকের পাশাপাশি তিনি ব্রোঞ্চ পদকও পান।
বিশ্বব্যাপী মূল্যবান ধাতু ব্যবসায়ীদের সংগঠন এলবিএমএ-এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বোস্টনের হোটেল বোস্টন পার্ক প্লাজায়। বুলিয়ন মার্ট, টরন্টোয় চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত এই বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন ৪০টি দেশের ৬৮০ জন প্রতিনিধি।
এই বৃহৎ আয়োজনে প্রতিনিধিত্ব করেন এলবিএমএ-র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুথ ক্রোয়েল, পরিচালক মনিরুজ্জামান, পরিচালক সোফিয়া জামান, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা লতিফ পাসরিচা, এশিয়া অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড ম্যাকক্যান এবং ইভেন্ট ডাইরেক্টর টম হিউলেট্ট।
মূল্যবান ধাতু ব্যবসায়ীদের সংগঠন এলবিএমএ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৭ সালে। এলবিএমএ-এর বার্ষিক সম্মেলন এবং নিয়মিত সেমিনারগুলোই নেতৃত্বস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা থাকেন যারা মূল্যবান ধাতুর বাজার পর্যালোচনা পূর্বক সাময়িক সমস্যাগুলোর অন্তর্দৃষ্টিগত মূল্যায়ন প্রদান করেন। বার্ষিক সম্মেলনের পাশাপাশি এলবিএমএ সদস্য, সহযোগী ও অতিথিদের জন্য অনানুষ্ঠানিক সামাজিক অনুষ্ঠান ও দ্বি-মাত্রিক খাবারের আয়োজন করে।
অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনার মাধ্যমে ২৮ অক্টোরব দুপুরে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয় এবং ২৯ ও ৩০ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী চলে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এলবিএমএ-এর চেয়ারম্যান পল ফিশার। এ ছাড়া এলবিএম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুথ ক্রোয়েল উদ্বোধনী বক্তব্য ও পরিচিতি পর্ব পরিচালনা করেন।
আন্তর্জাতিক ম্যাক্রো-ইকনোমিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং অপ্রকাশিত মুদ্রা ও ব্লকচেইন অর্থ বাজারকে পরিবর্তন করছে বলে বক্তারা জানান।
অনুষ্ঠানে আরেকটি মজাদার তথ্যপূর্ণ ও চোখ খুলে দেয়ার মতো সেশন ছিল- যেখানে আলিবাবা, আলফাবেট, অ্যামাজন এবং সোনার বাজার, মুদ্রাবাজারে পতন, মুদ্রা ও ঋণপত্রের বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক ব্যবচ্ছেদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
কেন বিনিয়োগকারীরা মূল্যবান ধাতুকে মূল্যায়ন করবে, পিজিএমের সঙ্গে কি হচ্ছে, আর্থিক সংকট ও আর্থিক বিষয় জানা, মূল্যবান ধাতু পরিশোধন, স্বর্ণের বাজারে স্বচ্ছতা, বোস্টন চা চক্র বিপ্লব বা পরিবর্তন, ভারত ও চীনে স্বর্ণের বাজার ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিন জনকে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে ৩০ অক্টোবর এ সম্মেলন সম্পন্ন হয়। মনিরুজ্জামান তার কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ অনুষ্ঠান দুটিতে পুরস্কার পান।
মনিরুজ্জামানের শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল মাইনস টু মার্কেট’ প্রায় ৩০ বছর ধরে বৈশ্বিক খনিজ সম্পদ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাণিজ্য করছে। যার কানাডিয়ান ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড নাম বুলিয়ন মার্ট। এসব প্রতিষ্ঠানে প্লাটিনাম, স্বর্ণ, রৌপ্য ও প্যালাডিয়াম পরিশোধন ও উৎপন্ন করা হয়। ভারত, সিঙ্গাপুর, হংকং, মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যার বাণিজ্য।
মনিরুজ্জামানের বুলিয়ন মার্ট মূল্যবান ধাতবের কয়েনও উৎপাদন এবং বিক্রি করে আসছে। অন্টারিও প্রদেশে রয়েল কানাডিয়ান মিন্টের নামকরা ৬ জন ডিলারের একজন তিনি।
সমাজসেবক হিসেবেও তার খ্যাতি রয়েছে। কানাডা এবং বাংলাদেশে বেশকিছু ধাতব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যুক্ত। মনিরুজ্জামান ১৫ বছর কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি এবং কানাডা-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) মাধ্যমে সর্বোচ্চ রফতানির জন্য উদ্যোক্তা পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
এমআরএম/জেআইএম