প্রবাসীদের সঙ্গে কেন মিশতে চায় না জার্মানরা
প্রবাসীদের জন্য জার্মানিতে ভালো কাজের সুযোগ থাকলেও জার্মানদের সঙ্গে তাদের মিশতে সমস্যা হয় বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে। দেশটিতে বেশি ভাড়া, কিন্ডারগার্টেনের স্বল্পতা ও জীবন-যাপনের ব্যয় বৃদ্ধি জার্মানদের মতো প্রবাসীদের জন্যও চ্যালেঞ্জ।
কিন্তু এগুলো প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা নয়, বিদেশিদের প্রতি জার্মানদের বন্ধুসুলভ আচরণের ঘাটতি রয়েছে কারণ, তারা মনে করেন প্রবাসীরা কৌশলে মেলামেশা করে তাদের ক্ষতি করবে।
জার্মানরা বন্ধুত্বপূর্ণ নয় বিষয়টি প্রথমবারের মতো উঠে আসেনি। দীর্ঘদিন ধরে তাদের অবন্ধুসুলভ আচরণ নিয়ে সমস্যায় পড়ার কথা বলে আসছেন প্রবাসীরা।
এবারের জরিপের ভিত্তিতে করা প্রবাসীদের জন্য সুবিধাজনক দেশের তালিকায় জার্মানির অবস্থান অনেক নিচে নেমে গেছে। ৬৮টি দেশের মধ্যে ৩৬তম অবস্থানে রয়েছে জার্মানি।
এ বিষয়ে বেসরকারি সংস্থা ইন্টারনেশনসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাল্টে সিক বলেন, ‘জার্মানিতে অবস্থানরতদের মধ্যে যারা এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, তাদের ৫৬ শতাংশই স্থানীয়দের থেকে বন্ধু পেতে সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছেন। আর বিশ্বব্যাপী মতামত দাতাদের মধ্যে এই সমস্যার কথা বলেছেন মাত্র ৩৬ শতাংশ।’
অভিবাসন নিয়ে সাধারণের মধ্যে বিতর্ক বিদেশিদের এ দেশে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বার্লিনভিত্তিক জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইকনোমিক রিসার্চ (ডিআইডাব্লিউ)-এর প্রধান মারসেল ফ্রাৎশার মনে করেন, জার্মানির দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি রয়েছে এবং সে কারণে বিদেশি কর্মীরা এ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বিদেশিদের প্রতি আরো সহশীল আচরণ করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে কয়েক মিলিয়ন মানুষ না এলে জার্মানির এই অর্থনৈতিক অগ্রগতি হতো না।’
এই অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে, উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বিশ্বের যে কোনো দেশে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তারা তখনই জার্মানিকে বেছে নেবেন, যখন দেখবেন ভালো কাজের সঙ্গে সমাজেও মিশে যেতে পারছেন। তাদের এই পথ করে দেয়ার জন্য আমাদের আরো অনেক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।’
ইন্টারনেশনের জরিপে, ২০১৮ সালে প্রবাসীদের সবচেয়ে পছন্দের দেশের তালিকায় সবার ওপরে আছে বাহরাইন। স্বস্তিদায়ক কর্মপরিবেশের পাশাপাশি সেখানে বসবাসও সহজ মনে করেন প্রবাসীরা। জীবনযাপনের সুবিধার কারণে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তাইওয়ান।
১৮৭টি দেশে বসবাসরত ১৮ হাজারের বেশি ব্যক্তির কাছে অন্য একটি দেশে বসবাসের ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়েছিল জরিপে। জার্মানি থেকে এক হাজার ৬৯২ জন জরিপে অংশগ্রহণ করেন।
এমআরএম/এমএস