মালয়েশিয়ায় দালালদের হাত থেকে বাঁচার আকুতি সঞ্জয়ের
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ভিসায় যান সঞ্জয় মল্লিক। দেশটির এক কোম্পানিতে সপ্তাহখানেক কাজ করার পর চরম অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর থেকে তাকে সেখানকার আদম দালালরা দেড়মাস গৃহবন্দি করে রাখে। কোনোভাবেই কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়নি। দেশে ফেরার আশায় সরকারের কাছে অনুরোধও জানায়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
সঞ্জয়ের অবস্থা যখন আরও খারাপ হতে থাকে তখন দালালরা তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। সঞ্জয় অভিযোগ করে, সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর মালয়েশিয়ার দালাল চক্র তাকে একটি ঘরে আটকে রাখে। কেড়ে নেয়া হয় পাসপোর্টও। বাড়ি ফেরার দাবি জানালেও কোনও কাজ হয়নি।
এরপর দেশের দালাল কবির মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সঞ্জয়। মালয়েশিয়া থেকে তাকে দেখে ফেরানোর জন্য ৫২ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। সেই টাকা দিলেও এখনও দেশে ফেরানোর ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি আদম দালাল কবির।
সঞ্জয় আরও অভিযোগ করেন, আমার দেশের এজেন্ট বলেছে, পাসপোর্ট পেলে তাকে দেশে ফেরানো হবে। অন্যদিকে মালয়েশিয়ার এজেন্ট তাকে জানিয়েছে, টিকিট পেলে তাকে দেশে পাঠানো হবে। দেড়মাস ধরে গৃহবন্দি থাকার পর তিনদিন আগে এক সহকর্মীর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে একটি ভিডিও মেসেজ পাঠান। যেখানে তার দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী কাছে বাঁচার আবেদন জানান।
এই বিষয়ে সঞ্জয় মল্লিকের আত্মীয় পবন মজুমদার বলেন, ‘আগে এলাকায় ইলেকট্রিকের কাজ করত সঞ্জয়। বিয়ের পর আরও বেশি অর্থের জন্য স্থানীয় এজেন্ট কবির মণ্ডলকে ধরেন। ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে কবির মণ্ডল তাকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। এখন সেখান থেকে ফিরতে চাইলে কোনও সাহায্য করছে না তারা। উল্টো ৫২ হাজার টাকা নিয়েছে। এ রকম অনেক ছেলে আটকে পড়ে আছে। এজেন্টদের থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না’
সঞ্জয়ের বাবা পান বিড়ির দোকান চালান। নিজের জমি জমা বন্ধক রেখে, গাড়ি বিক্রি করে ৫২ হাজার টাকা দিয়ে এখন অসহায় অবস্থা তাদের। এজেন্টের অফিসের এক কর্মী জানায়, তিন বছরের চুক্তিতে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল সঞ্জয়। দেড় মাসের আগে তাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।
সঞ্জয়ের বাড়ি ভারতের হুগলির বৈচির আবদপাড়ায়। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের আদম দালাল কবির এসব ঘটনার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সঞ্জয় মল্লিকের মতো একই অবস্থা নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা অমিত বিশ্বাসের। সেও অসুস্থ হয়ে আটকে পড়ছে। পরিবারের অভিযোগ এই ধরনের এজেন্ট টাকা নিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে না তাদের ছেলেদের।