চুয়াডাঙ্গার আর্জিনার সৌদি থেকে দেশে ফিরতে আহাজারি
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা থানার জয়রামপুরের আর্জিনা বেগম সৌদি আরবের আবহা সেফ হোম থেকে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। তিনি একজন হার্টের রোগী। তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তার পাসপোর্ট নম্বর বিকিউ ০২৬৫৮৭০।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আর্জিনা গত সাত মাস পূর্বে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় দালালের খপ্পরে পড়ে এক ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে আসেন। তাকে ২০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে বলে চুক্তি হয়। বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সি তাদের চুক্তি অনুযায়ী সৌদি আরবের গৃহকর্মী সংক্রান্ত অফিসে (স্থানীয় ভাষায় মক্তব) তাকে প্রেরণ করে। পরে সেখান থেকে তাকে তার নিয়োগকর্তার (কফিলের) নিকট হস্তান্তর করা হয়। দুইমাস কাজ করার পর বুকে ব্যথা অনুভূত হলে তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এবং তার হার্টের সমস্য ধরা পড়ে। নিয়োগকর্তা তাকে অন্য একটি বাসায় কাজ দেয়।
আর্জিনার অভিযোগ, তার ভাষাগত দক্ষতা না থাকাসহ বিভিন্ন অজুহাতে গৃহকর্তা তাকে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে এক পর্যায়ে পালিয়ে চলে আসে খামিস মুশাইতে। সেখানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের (আসির প্রদেশ) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আজাদ রহমানের দৃষ্টি গোচর হলে তিনি তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেন। আজাদ রহমান বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দার প্রতিনিধি আব্দুল হককে বিষয়টি অবহিত করান। পরে আজাদ রহমান ও আব্দুল হক স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের শরণাপন্ন হন এবং আর্জিনাকে পুলিশের কাছে হস্থান্তর করেন।
পুলিশ প্রশাসন পুনরায় তার সম্মতিক্রমে তাকে একটি বাসায় নিয়োগ দেন। সেখানেও তিনি নির্যাতনের শিকার হলে খামিস মুশাইত সিটি সেন্টারে বঙ্গবন্ধু পরিষদের (আসির প্রদেশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এইচ এম কামাল এবং ওমর ফারকের শরণাপন্ন হন। তারা আজাদ রহমানকে বিষয়টি অবহিত করালে আজাদ রহমান আব্দুল হককে অবহিত করান। পরে তারা ফের আর্জিনাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
জেদ্দা কনস্যুলেট অফিসের স্থানীয় প্রতিনিধি আব্দুল হক জানান, ওই নারীকে বর্তমানে আবহা সেফ হোমে রাখা হয়েছে। তার নিয়োগকর্তার নিকট থেকে তার পাসপোর্ট উদ্ধার করে তাকে দেশে পাঠানোর জন্য চেষ্টা চলছে।
আরবি ভাষাগত দক্ষতা না থাকায় অনেকে নির্যাতনের শিকার হন। এজন্য স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানোর আগে আরবি ভাষার দক্ষতা নিশ্চিত ও যথাযথ মেডিকেল চেকআপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে নারী শ্রমিক সম্পর্কিত চুক্তির পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ নারী শ্রমিক সৌদিতে গেছেন। এর মধ্যে নির্যাতনের মুখে ৫ হাজারের বেশি নারী দেশে ফেরত এসেছেন। এদের বেশিরভাগ নারী সৌদি আরবের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে থেকে দূতাবাসের সহায়তায় দেশে ফিরে আসেন।
এসআর/জেআইএম