পরিবারের খুশিতে প্রবাসী জলিলও খুশি
মালয়েশিয়ায় কষ্টের জীবন কাটাতে হচ্ছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার যোগশর গ্রামের জলিলকে। জীবিকার তাগিদেই কষ্টই তার অন্ন জোগায়। পরিবার সুখী হলে তাতেই আমার সুখ জানান পরবাসী জলিল।
কুয়ালালামপুরের সিএইচইসি কনস্ট্রাকশন কোম্পানির অধীনে জালান ইপুহ এম আরটি প্রজেক্টে কাজ করেন তিনি। দিন-রাতের অর্ধেকটা সময়ই তাকে কাজ করতে হয়।
বাংলাদেশের বহু যুবক কাজ করছেন এ প্রজেক্টে। রাত-দিন ২০ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম করে তবেই টিকে থাকতে হয় অভিবাসী এ শ্রমিকদের।
২০০৭ সালে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান জলিল। স্বচ্ছলতা ফেরাতেই বাবা-মা, তিন ভাই, এক বোন ও এক মেয়েকে ছেড়ে পাড়ি জমান পরবাস জীবনে।
কলিং ভিসায় সে সময় প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় আসা জলিল এদেশে এখন রি-হিয়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধ হওয়ার চেষ্টা করছেন। সব কার্যক্রম শেষ করে ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
জলিলের বেতনও আহামরি নয়। মাত্র ১১শ’ রিঙ্গিত। বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র সাড়ে ২২ হাজার টাকা।
জলিল এ প্রতিবেদককে জানান, দুই বছর অবৈধ ছিলেন। সে সময় কাজ করতে তাকে বেশ অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। কারণ হরহামেশা চলে পুলিশের অভিযান। ধরা পড়লে গুনতে হয় মোটা অংকের অর্থ। এক বন্ধুর কল্যাণেই এই প্রজেক্টে কাজ। সরকারি প্রজেক্ট বলে পুলিশও খুব একটা ঝামেলা করে না। আর মালিকরা পুলিশের সঙ্গে এক রকম বোঝাপড়া করেই অবৈধ শ্রমিকদের কাজ দেন। এর বিনিময়ে তারা অধিক কর্মঘণ্টা খাটিয়ে স্বল্প বেতন দেন। দু’দিক থেকেই লাভ মালিকদের।
তবে সম্প্রতি রিঙ্গিতের দাম পড়ে যাওয়ায় চিন্তিত জলিলের মতো প্রবাসী শ্রমিকদের। গতকাল (রোববার) বাড়িতে টাকা পাঠিয়েছেন রিঙ্গিত প্রতি ২০ টাকা ৫৪ পয়সা রেটে, ১৫ হাজার টাকা জানান জলিল।
অসহায় কণ্ঠে তিনি বলেন, দিন রাত সব সময় কাজ আর কাজ। বাসায় গিয়া রান্না কইরা খাইয়া ঘুমাইতে ঘুমাইতে হাতে থাকে বড়জোড় ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। আর ভালো লাগে না। তবুও ৩ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতের দিকে তাকিয়ে এবং পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে প্রবাসে ভূতের কষ্ট করতেই হবে আমার।
প্রবাস ছাড়া দেশে গিয়ে কি করব? প্রবাসে কষ্টের বিনিময়ে পরিবার যদি সুখী থাকে আমিও খুশি।
এমআরএম/পিআর