পর্তুগালে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ উদযাপন
পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ উৎসব’। বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের আয়োজনে ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে এ উৎসব।
লিসবনের বিখ্যাত ওরিয়েন্তে মিউজিয়ামে সকাল ১০টায় শুরু হয়। মিউজিয়াম প্রবেশ পথে দেশীয় আমেজে দেশি, বিদেশি অতিথিদের মিষ্টিমুখ করিয়ে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী ও দূতালয় কর্মকর্তারা।
বেলা ১১টায় অতিথিদের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো লিসবনে অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। লিসবনের ওরিয়েন্ত মিউজিয়ামের সামনে থেকে শুরু হয়ে লিসবনের টাগুস নদীর তীরে ঘুরে আবার মিউজিয়ামে ফিরে আসে। ১১টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশের চিত্রকর্ম ও পোশাক প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশের রঙ’ এর উদ্বোধন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে দেশীয় পোশাক ও সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলেন রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী।
এরপর বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শিশু-কিশোরদের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত মুখোশ বানানো প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১২টায় বেইজিং হলে বাংলাদেশি শিল্পী কে এম মোস্তফা আনোয়ার স্বপনের দিক নির্দেশনায় বাংলাদেশি সঙ্গীতের ওপর কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর ১টায় বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী প্রতীকী বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বর কনে সাজেন পর্তুগালে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। এরপর বিদেশিদের হাতে দেশীয় মেহেদী লাগিয়ে দেয়া হয়। দুপুর দুইটায় প্রায় ৫০০ দেশি বিদেশির অংশগ্রহণে বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী পান্তা ইলিশসহ দুপুরের খাবার পরিবেশিত হয়।
এবং সবশেষ সন্ধ্যে ৬টায় বাংলাদেশি লোক, বাউল ও সঙ্গীত পরিবেশনা, নৃত্য এবং বাঙালি ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেশি, বিদেশি শিল্পী ও মডেলরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন।
পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি ও পর্তুগালের স্থানীয় নাগরিকরা ছাড়াও সারা বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন কমিউনিটির মানুষদের অংশগ্রহণে পুরোদিনের আনন্দ আয়োজনে লিসবনের ওরিয়েন্ত মিউজিয়াম যেনো ক্ষুদে এক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলো। দেশীয় উৎসব আয়োজন, দেশীয় গান সংস্কৃতি, দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার, মুসলিম বিয়ের প্রদর্শনী, দেশি বিদেশিদের পরনে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক সবমিলিয়ে দীর্ঘ সময় পর পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও পুরো দিনটি কাটিয়েছে দেশীয় আমেজে।
বিদেশের নানা মিশ্র সংস্কৃতির মধ্যে বিশ্বের মাঝে বাঙালির সংস্কৃতি তুলে ধরাই ছিলো এমন অনুষ্ঠান আয়োজনের একমাত্র প্রয়াস বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের রাষ্ট্রদূত মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী। তিনি জানান ‘বাংলাদেশ উৎসবে ব্যবহৃত দেশীয় পালকি ও দেশীয় সংস্কৃতির সব চিত্রকর্মগুলো মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হবে আরও সপ্তাহখানেক ফলে মিউজিয়ামের হাজারও দর্শনার্থীরা আমাদের সংস্কৃতি দেখার ও জানার সুযোগ পাবে।
এমআরএম/এমএস