ট্রাভেল পাস জটিলতায় দেশে ফিরতে পারছেন না অবৈধ বাংলাদেশিরা
মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার ট্রাভেল পাস থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যেসব অবৈধ বাংলাদেশির ডিজিটাল পাসপোর্টের ফটোকপি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে, তাদেরকেও হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাস দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে অবৈধ যথাসময়ে ট্রাভেল পাস না পাওয়ায় হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরতে পারছেন না।
তবে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে মালয়েশিয়া থেকে ট্রাভেল পাস নিয়ে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকতে পারে এমন আশঙ্কায় ট্রাভেল পাস ইস্যু প্রক্রিয়া কড়াকড়ি করা হয়েছে। পাশাপাশি গত ১২ ডিসেম্বর থেকে হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ ট্রাভেল পাস ইস্যুতে করারোপ করায় এ পরিস্থিতি আও জটিল হয়েছে।
ওদিকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন আইনানুযায়ী ট্রাভেল পাস বঞ্চিত অবৈধ বিদেশিরা গ্রেফতার হলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এ কারণে অনেক অবৈধ বাংলাদেশি সরকার নির্ধারিত ৪৪ রিংগিত দূতাবাসের একাউন্টে ব্যাংকে ফি জমা দিয়ে এবং দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত চার থেকে পাঁচশ’ রিংগিত ঘুষ দিয়ে ট্রাভেল পাস নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সেলর সায়েদুল ইসলাম মঙ্গলবার এ প্রতিবেদককে বলেন, ট্রাভেল পাস দেয়া বন্ধ করা হয়নি। তবে যাচাই-বাছাই করে দেয়া হচ্ছে যাতে ইস্যুকৃত ট্রাভেল পাসের অপব্যবহার না হয়। হাইকমিশনের ট্রাভেল পাস সেকশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, ট্রাভেল পাস দেয়া বন্ধ এমন কথা যারা বলছেন তারা সঠিক বলেননি; ট্রাভেল পাস দেয়া বন্ধ হয়নি।
প্রতিদিন বাংলাদেশ হাই কমিশনে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অবৈধ কর্মীরা ট্রাভেল পাসের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। অবৈধ কর্মীরা ভোর বেলা থেকে বিকেল পর্যন্ত দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ট্রাভেল পাস না পেয়ে নিরাশ মনে খালি হাতে কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে হাইকমিশনে ট্রাভেল পাসের কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারে আগত কর্মীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বলে ও অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের অনেকে আউট পাসের জন্য ৪৪ রিংগিত ব্যাংক ড্রাফট কেটে তার ডিজিটাল পাসপোর্টের ফটোকপি এবং স্থানীয় নির্বাহী অফিসারের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে হাইকমিশনে আউট পাস সেকশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। যারাই চার-পাঁচশ’ রিংগিত বকশিস দিচ্ছেন, তাদের ভাগ্যেই আউটপাস জুটছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসিরা বলছেন, দেশটিতে কর্মরত বৈধ-অবৈধ সব বাংলাদেশিই ট্রাভেল পাস পাওয়ার অধিকার রাখেন। প্রবাসে এসে এরাই কঠোর পরিশ্রম করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এখন যারা বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়েছেন তাদের মধ্যে যাদের ভোটার আইডিকার্ড, ইউএনওর সনদ এবং পাসপোর্টের কপি আছে তারা যে কোনো সময়ে ট্রাভেল পাস চাইলে হাইকমিশন তা দিতে বাধ্য। হাইকমিশনের ট্রাভেল পাস সেকশনের অসাধু কর্মকর্তা টু-পাইস কামানোর জন্যই ট্রাভেল পাস ইস্যু কমিয়ে দিয়েছেন।
এমএমজেড/আইআই