বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতিতে ইতালিতে শোভাযাত্রা
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি উপলক্ষে ইতালির মিলানে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় তুষারপাত আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় মিলান লোম্বাদিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলান ইতালির আয়োজনে এ শোভাযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের কনসাল জেনারেল রেজিনা আহমেদের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রায় কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তারা এবং মিলান লোম্বারদিয়া আওয়ামী লীগের নেতারাসহ শত শত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কনসাল জেনারেল রেজিনা আহমেদ।
পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদর্শন করা হয়। এ সময় কনসাল জেনারেল রেজিনা আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের দেশ গড়ার কাজে উৎসাহ যোগাবে। তিনি এ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ইতালিয়ান সিনদাকোর নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। দিয়ানা দি মারকে এ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে আনন্দিত হয়ে ৭ মার্চের ভাষণকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ৩০ অক্টোবর ইউনাইটেড নেশন অ্যাডুকেশন, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ইউনেস্কো) ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে (ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) বিশ্বে প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক ইরিনা বুকোভা এ ঘোষণা দেন। সেই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের আন্তর্জাতিক রেজিস্ট্রার স্মৃতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কমিটি (আইএসি) কোনো প্রামাণ্য দলিল বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে রেজিস্টার হবে কি-না বা যোগ্য কি-না তা বিচার বিশ্লেষণ করে থাকে। এ কমিটি এ বছর ২৪ থেকে ২৭ অক্টোবর আয়োজিত সংগঠনটির বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্বে আন্তর্জাতিক রেজিস্টার্ড মেমোরি হিসেবে মনোনীত করে।
বর্তমানে ম্যামোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে সব মহাদেশগুলো থেকে ৪২৭টি প্রামাণ্য দলিল সংগ্রহ ও তালিকাভুক্ত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভাষণটি স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রস্তুতির দিকে ঝুঁকে পড়তেও উৎসাহিত করে। এটি মুক্তিবাহিনীতে যোগদানকারী মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের অন্যতম প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দেশের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান প্রচারে বাঙালি জাতির হৃদয় ও মনকে উৎসাহিত করে। এ ভাষণ এদেশের মানুষকে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে।
এ আনন্দ প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে, লোম্বারদিয়া আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ. মান্নান মালিথা, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল কবির জামান, রাজনৈতিক ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আকরাম হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ শিপন, যুগ্ম সম্পাদক জামিল আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক তুহিন মাহামুদ, প্রচার সম্পাদক জাকির হোসেন মামুন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ খান তপু প্রমুখ।
শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, গাফ্ফার, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী নেছার উদ্দিন, গালারাত আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সুলতান শরীফসহ লোম্বারদিয়ার বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। শোভাযাত্রাটি মিলানের প্রাণকেন্দ্র পিয়াচ্ছা সানবাবিলায় সম্পন্ন হয়।
এমআরএম/জেআইএম