ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না: ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:১৫ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করছে’ তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দয়া করে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। প্রতিটি কথা মেপে বলা দরকার। এমন কথা বলবেন না যাতে পতিতরা সুযোগ পেয়ে যায়। তারা যেন ফিরে আসতে না পারে সেজন্য ঐক্য ও মেধা দিয়ে কাজ করতে হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর একাত্তরের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। এখন যেন আবার ইতিহাস বিকৃত না হয়। মেধাবী মানুষগুলোকে সরিয়ে দিয়ে একনায়কতন্ত্রের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে স্বৈরাচাররা। ৭১ সালে সেটি করেছে পাকিস্তান।

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘উনি কেন, কী বোঝাতে চাচ্ছেন? জানি না। গভীরতা কী? জানি না । এ সরকারকে তো আমরা সবাই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। জনগণ সমর্থন দিচ্ছে। বিএনপি সমর্থন দিচ্ছে। তাদের কাজ একটা পরিবেশ তৈরি করা।

তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, উনি (তথ্য উপদেষ্টা) না বুঝে বলে থাকেন কোনো মত নেই। তবে, বুঝে বলে থাকলে তা প্রত্যাহার করতে হবে।’

নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে জেতা যাবে না। জিততে হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে জিততে হবে। কারণ পতিতরা সোশ্যাল মিডিয়া প্রোপাগান্ডা চালিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা ১৫ বছর লড়াই করেছি, আর ছেলেরা দুই মাসে কি এমন অলৌকিক শক্তি পেয়েছিল? স্বৈরাচার পালাতে বাধ্য হরো। এ শক্তি হলো কথা ও সোশ্যাল মিডিয়ার কার্যক্রম।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে ভয় পাইয়ে দিতে, তরুণ ও বুদ্ধিজীবীদের আয়নাঘরে নিয়েছিল। একে মারে, একে ধরো, এটা হতে দেওয়া যায় না। গণতন্ত্র হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, আপনার মনে করেছেন হাসিনা পালিয়ে গেছে, শেষ- না। আমাদের সামনে আরও বেশিকাজ। নির্বাচনে শেষ হলেই কাজ শেষ নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত কাজ করতে হবে, আমাদের কাজ দীর্ঘসময়ের।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছিল। প্রমাণিত, এদেশের মানুষ ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা পেলে সরকার পরিবর্তন করতে পারে। মানুষ চায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক মুক্তি।।

‘অন্তর্বর্তী সরকার যে মেসেজ দিয়েছে সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। নির্বাচন বিলম্বিত হলে সরকারের জন্য খারাপ, জনগণের জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে নির্বাচনকে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তবে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘পাকিস্তানি যখন আর আমাদের কন্ট্রোল করতে পারছে না, তখন তারা এদেশের যারা ইন্টেলেকচুয়াল ব্যক্তিদের হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয় এবং তার বাস্তবায়ন করা হয়। ২৪-এ বিজয়ের আগে কিন্তু ইন্টেলেকচুয়াল ব্যক্তিদের টার্গেট করা হয়নি। তবে, ইন্টেলেকচুয়াল উদীয়মান তরুণদের হত্যা করে পালিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনা। এদের দেশে নিয়ে এসে আইনানুগ বিচার দাবি করছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, আজকের যারা বুদ্ধিজীবী তারা তোষামোদি বুদ্ধিজীবী, আমরা তাদের মতো বুদ্ধিজীবী দেখতে চাই না। আমরা তাদের ধ্বংস কামনা করি। আর যারা জনগণের বুদ্ধিজীবী তাদের মঙ্গল কামনা করি।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তান পরাজিত হওয়ার আগে সব জ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে দেশকে মেধাশূন্য করা হয়েছিল। ফ্যাসিবাদ তার শাসন আমলে দেশের শিক্ষা, শিক্ষিত, আমলাতন্ত্র সব সেক্টর ধ্বংস করার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, সেটির বাস্তবায়ন করেছে এ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আমরা পারিনি, কিন্তু ছাত্র-জনতা বুক পেতে দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জিয়াউর বলেছিলেন পাকিস্তানিদের তাড়িয়ে বিজয় অর্জন করতে পেয়েছি, আমাদের কি আবার ভারতকে তাড়াতে যুদ্ধ করতে হবে? তখন তার চাইতে কথায় অবাক হয়েছি। কিন্তু এখন তার বাস্তবতা দেখছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী একটি দেশ আমাদের ওপর হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।

কেএইচ/এমএএইচ/এএসএম