ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

উপদেষ্টাদের অনেকের আজীবন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা: হাফিজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনূস যাদের নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন, তাদের অনেকেই আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনা ধারণ করেন এমন ব্যক্তিদের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি (একাংশ) আয়োজিত ‘গণ-অভ্যুত্থান জন-আকাঙ্ক্ষা: রাষ্ট্র মেরামতে প্রস্তাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। লেবার পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

বৈঠকে হাফিজ বলেন, এই সরকার গঠিত হয়েছে জনরায়ে, জনগণের ইচ্ছায়। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, আমরা ধীরে ধীরে হতাশ হচ্ছি! প্রফেসর ইউনূস দেশের কৃতি সন্তান, বিশ্বব্যাপী তার পরিচিতি। তিনি বিদেশে বাংলাদেশের ফেইস, তারচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি আমরা এই মুহূর্তে পেতাম না। তিনি ক্ষমতায় থাকতেও চান না, আগেও তাকে অফার করা হয়েছিল, থাকেননি। এখনো যে তিনি খুব ইনজয় করছেন, তা মনে হয় না। কিন্তু একটা কথা আমার বলতে হচ্ছে, তার টিম সিলেকশনটা ঠিক হয়নি। তিনি যাদের সঙ্গে নিয়েছেন, তাদের অনেকের আজীবন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা আছে। হয়তো প্রকাশ করতে পারেন না, কিন্তু ভাবভঙ্গিতে এমনই মনে হয়।

সংস্কারের জন্য কত সময় লাগতে পারে এমন প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, যে ছয়টি কমিশন করা হয়েছে, এদের প্রজ্ঞাপন করতেই ছয়দিনের বেশি সময় লেগেছে, যেটা দুই দিনের বেশি লাগার কথা না। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে যাচ্ছে। পতিত শক্তি আবার ফিরে আসতে চায়। আনসার বাহিনী পর্যন্ত ক্যু করতে চায়, এমনই দুর্বল একটা সরকার।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রফেসর ইউনূস একেকজন উপদেষ্টাকে চারটা-পাঁচটা করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে এদের কোনো অভিজ্ঞতাই তো নেই। এই ব্যাপারে তাকে চিন্তা করতে হবে। অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ভালোদের নিয়ে দায়িত্ব দেন। দরকার হলে যে ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছে, তাদের থেকে আরও লোক নেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের টিমে খেলে এসেছেন অতীতে, তাদের আর মন্ত্রিপরিষদে আমরা দেখতে চাই না।

এই বিএনপি নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। সরকার অনেক কথা বলে, কিন্তু একটা কথা তাদের মুখ থেকে শোনা যায় না যে নির্বাচন কবে হবে। ইলেকশন কমিশন কবে গঠন হবে! অরাজনৈতিক এবং বিজ্ঞ লোকদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। অরডিন্যান্সের মাধ্যমে আইন যদি পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে তা দ্রুত করা যায়।

আওয়ামী লীগের আর রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যে ক্ষতি করেছে বাংলাদেশের। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর আমরা মনে করেছিলাম সুন্দর একটা দেশ আমরা পাবো। গণতন্ত্র চিরদিন থাকবে বাংলাদেশের বুকে, কোনো বৈষম্য থাকবে না। মানবিক মর্যাদা, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার অবিলম্বে প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু যতই দিন গেছে, ততই আস্তে আস্তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দূরে সরে গেছে। আমরা পেয়েছি একটা একদলীয় রাষ্ট্র—বাকশাল।

অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন জুইয়ের সঞ্চালনায় বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কারের ২৩ দফা তুলে ধরেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম। আলোচনায় আরও অংশ নেন লেবার পার্টির একাংশ চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাবেক বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবেদীন ফারুক, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, জানিপপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ।

কেএইচ/ইএ/এমএস