ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

সাগর-রুনি হত্যার বিচার করে দায়মুক্তির সময় এখন: দুদু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়মুক্তির এখনই সময় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায় তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার৷

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে এক সামবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক ও বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সাগর-রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যে সরকারের সময় হত্যা করা হয়েছিল, সেই সরকারের অনেক প্রিয়ভাজন ব্যক্তি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অনেকে মনে করে। এ কারণে দীর্ঘ সময় এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হয়েছে, কিন্তু চার্জশিট দেওয়া হয়নি।

‘তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলেছে, তারা এটি করবেন। আমরাও বিশ্বাস করি এটি তারা করবেন। কিন্তু সময় থাকতে তা শেষ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। সেই বিবেককে যদি মুক্ত না করা হয়, কালাকানুন যদি বাতিল না করা হয়, তাহলে দেশের কী পরিস্থিতি তা তুলে ধরা সাংবাদিকদের জন্য খুব কঠিন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। এটিকে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করি।

হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এখনো অনেক কালাকানুন আছে। এগুলো বাতিল করতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য আইন করতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেসব আইন করা হয়েছে, সেগুলো বন্ধ করতে হবে।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সাগর-রুনিসহ যেসব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেগুলোর বিচারের দাবিতে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন করতে হবে। মুক্তভাবে সাংবাদিকতা করার সুযোগ করে দিতে হবে। যেসব সাংবাদিক বিগত সরকারের কুকর্মে সমর্থন দিয়েছেন আমরা তাদেরও বিচার চাই। আমাদের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। সাগর-রুনি হত্যার বিচার অবিলম্বে করতে হবে।

কবি হাসান হাফিজ বলেন, এখনো কালাকানুনগুলো দূর হয়নি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এখনো নিরঙ্কুশ হয়নি, নিশ্চিত হয়নি। অনেক সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। কালাকানুনগুলো যেন রোধ করা হয়৷ সাগর-রুনির প্রকৃতি খুনিদের যেন চিহ্নিত করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। একটি অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ চালাচ্ছে। তারা একটি সংস্কারের কাজ করছে৷ আমাদের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রত্যেকের দায়িত্ব তাদের সহায়তা করা, সংস্কারের ক্ষেত্র তৈরি করা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সুগম করা। সেক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়-দায়িত্ব রয়েছে।

সভপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। আমরা তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। প্রথম দাবি ছিল- ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা; দ্বিতীয় দাবি ছিল- সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার আর তৃতীয় দাবি ছিল- সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়া।

তিনি বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও এখনো সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। আমরা উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আহ্বান রাখতে চাই, অবিলম্বে সব সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। এর বাহিরে আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। কোনো তালবাহানা দেখতে চাই না। এরপর সব বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দিতে হবে।

কেএইচ/আরএএস/এমকেআর/জেআইএম