নানক
রাজাকারের সন্তানরা ভারত বিরোধিতা করছে, এটি তো তাদের পুরোনো অভ্যাস
গণহত্যা দিবস পালন না করার জন্য বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘২৫ মার্চ বিএনপি সমাবেশ করে। কিন্তু সেই সমাবেশে বসে তারা ২৫ মার্চকে স্মরণ করে না। কীভাবে স্মরণ করবে? ২৫ মার্চ যারা স্মরণ করবে সেই রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন রাজাকার।
তিনি বলেন, ‘রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন পাকিস্তান পুলিশে কর্মরত। পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আরেকজন হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; যার বাবা চোখা মিয়া যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় চোখা রাজাকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। সেই চোখা রাজাকারের ছেলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা তো অবশ্যই পাকিস্তানিদের আইএসআইকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভারতবিরোধীতার জিকির তুলবেন; এটি তো তাদের পুরনো অভ্যাস, পুরনো খাসিলত।’
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের উদ্যোগে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
এসময় নানক বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে হলে শুধু আমাদের দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে সমস্ত বাঙালিদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। বাইরে অবস্থানরত বাঙালিদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, যারা যুদ্ধ করেছি এবং এখনো বেঁচে আছি, ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করলে আত্মতৃপ্তি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারবো।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ জাতির ইতিহাসে ‘কালরাত্রি’ হিসেবে চিহ্নিত। ওই রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর নামে শুরু করেছিল বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। একই সঙ্গে ২৫ মার্চ দিনগত রাতে তারা গ্রেফতার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ শুরু হওয়া অপারেশন সার্চ লাইটের নামে পরবর্তী ৯ মাস পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দেশব্যাপী গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণের মতো নারকীয় নৃশংসতা চালায়। এত অল্প সময়ের অপারেশনে শহীদ হয়েছিলেন ৩০ লাখ অসহায় মানুষ। ধর্ষিত হয়েছিলেন কয়েক লাখ নারী। দেশত্যাগী হয়েছিলেন প্রায় এক কোটি নিরিহ মানুষ। মাত্র ৯ মাসে ৩০ লাখ আদম সন্তানের অসহায় মৃত্যু: এতবড় গণহত্যা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকেই বাংলাদেশের গণহত্যার আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তির দাবি জোরালো হয়।
আলোচনা সভায় সম্মানীয় আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একুশে এবং স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং সম্প্রীতি বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্রাহাম লিংকন, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মেজর (অব.) হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এনএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস