ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

ছাত্রদল কখনো বিএনপির কমান্ডে পরিচালিত হয় না

খালিদ হোসেন | প্রকাশিত: ১০:১০ এএম, ১৯ মার্চ ২০২৪

‘এখানে শিক্ষার মান দিন দিন নিম্ন থেকে নিম্নগামী হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে সহাবস্থান, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানো, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ-নির্যাতন থেকে যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে চান তাহলে এক দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া করণীয় আমাদের নেই। এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।’

গত ১ মার্চ ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের পর সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এসময় শিক্ষা, রাজনীতি ও সহাবস্থান বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খালিদ হোসেন।

জাগো নিউজ: ছাত্রদলের নতুন কমিটি হলো। এখন আপনাদের পরিকল্পনা কী?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আমাদের নতুন কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে।

বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের শিক্ষার অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। এখানে শিক্ষার মান দিন দিন নিম্ন থেকে নিম্নগামী হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে সহাবস্থান, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানো, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ-নির্যাতন থেকে যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে চান তাহলে এক দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া করণীয় আমাদের নেই। এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ছাড়া কোনো গণতান্ত্রিক অধিকার বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

আমরা স্বচ্ছতা নিয়ে রাজনীতি করি। আমরা বলতে পারি আমাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা রয়েছে। হ্যাঁ, শতভাগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কারও পক্ষে চলা সম্ভব নয়। যতক্ষণ এদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা না হবে ততক্ষণ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্র সংগঠনের গণতন্ত্র চর্চা করা সম্ভব নয়।

আমাদের চ্যালেঞ্জ অনেকগুলো। অনেক গুরুদায়িত্ব রয়েছে, সাংগঠনিক কাজ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিরসনে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করবো। দৃশ্যমানভাবে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে, কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের ভুলুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।

জাগো নিউজ: এবার ছাত্রদলের কত সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি হবে?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: মাত্র আমাদের নতুন কমিটি হলো। এরই মধ্যে আমরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে, যারা জেলা কারাগারে রয়েছেন, কারামুক্ত হয়েছেন তাদের খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। কীভাবে আমাদের সহাবস্থান নিশ্চিত করা যায় সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখনই কমিটিকেন্দ্রিক কোনো বিষয় আমরা শুরু করিনি। ইনশাল্লাহ দ্রুততম সময়ে এ কাজগুলো শুরু করবো।

জাগো নিউজ: এই মুহূর্তে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপনাদের নির্বাচিত কমিটি আছে?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের কমিটি রয়েছে। শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি বিভিন্ন কারণে দেওয়া হয়ে ওঠেনি। ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব সেখানে। আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে বারবার হামলা চালায়। কয়েকদিন আগে মিছিল হলো। সেখানেও ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে আমাদের দুজন নেতাকে গুরুতর আহত করেছে। বাকি সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কার্যকরী কমিটি রয়েছে। যারা আন্দোলনে পরীক্ষিত যোগ্য নেতৃত্ব তাদের মাধ্যমেই কমিটিগুলো পরিচালিত হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারলেও ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

জাগো নিউজ: একটা সময় ছিল যে নবীনবরণের মাধ্যমে ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ করা হতো। সামনে কি এমন কোনো পরিকল্পনা আছে?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আমরা এরই মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে সদস্য বাড়ানোর জন্য কাজ করছি। কিন্তু এখানে আমি শুরুতে বলছি, যতদিন এদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হবে ততদিন এই নবীনবরণ থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে ধরনের ছাত্ররাজনীতি প্রত্যাশা করে সে ধরনের ছাত্ররাজনীতি উপহার দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

ক্যাম্পাসগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকগুলো সমস্যা রয়েছে, তাদের মূল সমস্যা এ অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে ব্যাংক লুট এবং রিজার্ভ লুট করেছে তার প্রতিফলন কিন্তু আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। রমজান মাস এসেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এর প্রভাব সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর গিয়ে পড়েছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এগুলোর দিকে নজর কিন্তু সরকার কখনোই দেয়নি। উপাচার্য মহোদয়সহ যারা রয়েছেন তাদেরও কখনোই এদিকে দৃষ্টিপাত করার মতো সুযোগও নেই। কারণ অর্থ সংস্থান তাদের নেই যে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের মান উন্নত করবে।

‘এখানে শিক্ষার মান দিন দিন নিম্ন থেকে নিম্নগামী হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে সহাবস্থান, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানো, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ-নির্যাতন থেকে

এখানে আরেকটা ছাত্রলীগের আধিপত্য। তারা ক্যান্টিনে ফাউ খাবার যে সংস্কৃতি চালু করেছে সেগুলো তো এখনো অব্যাহত রেখেছে। এখন ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায়, দেশে গণতন্ত্র নেই, তারা আরও বেশি এখন খাবার খেয়ে টাকা দেয় না। এমনিতে সর্বোপরি সাধারণ জনগণের যে অসুবিধা হচ্ছে, ঠিক একইভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সে ধরনের সমস্যা ফেস করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার মতো পরিস্থিতি এখন দেশে নেই।

আরও পড়ুন

সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে ধরনের ন্যক্কারজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে সেখানে কখনোই সুষ্ঠুভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য, তরুণ প্রজন্মের জন্য আমাদের ছাত্ররাজনীতি করা খুবই দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য তরুণ প্রজন্মের আগামীর ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিতকল্পে লড়াই করছে, রাজপথে রক্ত দিচ্ছে, জীবন দিচ্ছে কিন্তু রাজপথ ছেড়ে যায়নি। যতদিন আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করবো ততদিন রাস্তা ছেড়ে যাবো না।

জাগো নিউজ: এবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কত শতাংশ নারী রাখার চিন্তা-ভাবনা আছে?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যক্কারজনক ভূমিকার পরও আমাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী নেত্রী রাজপথে এখনো লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এরাই সত্যিকার অর্থে দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতীক। আগামীতে যদি ইতিহাস লেখা হয় এই নারী নেত্রীদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ তারা এত প্রতিকূলতার মধ্যেও মামলা-হামলা মোকাবিলা করে রাজপথে থাকছে।

আমাদের বেশ কিছু নারী গত ২৮ অক্টোবরের পরেও গ্রেফতার হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন কারাভোগ করে তারপর মুক্ত হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাকে কীভাবে প্রায় দুই বছর কারাবরণের পর মুক্ত করা হলো। তো এ ধরনের যখন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয় তখন বাকি নারীরা রাজনীতি থেকে রাজনীতিবিমুখ হয়ে যায়।

ছাত্রদল দাবি করতে পারে যে তারা দীর্ঘদিন লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে বেশ কিছু ত্যাগী সাহসী নারী জন্ম দিয়েছে; যারা সব ত্যাগ স্বীকার করে রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। তারা কোনো চাকরিতে যাচ্ছে না। অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন দাবি করতে পারবে না তাদের নারী নেত্রীরা দীর্ঘদিন রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করছে।

আপনি দেখেন প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়। এটি আপনার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সাধারণ জনগণের কথা। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। এর বিরুদ্ধে ছাত্রদল দ্রুততম সময়ে দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করবে।

জাগো নিউজ: আপনাদের একটা চর্চা আছে যে বিবাহিত হলে ছাত্রদল করা যাবে না, আপনাদের নতুন কমিটির চিন্তা কী?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: বিবাহিত বিষয়টা অবশ্যই আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ছিল। গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ছাত্রদল নেতাকর্মীকে আহত করেছে, বন্দি করেছে। আমাদের বেশ কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তারা যৌবনের সবচেয়ে সোনালি দিনগুলো বিসর্জন দিলো রাষ্ট্রের জন্য, গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য। আমরা সেই দিকগুলো বেশি বিবেচনা করবো। এখানে বিবাহিত ইস্যুটা দিয়ে কারও ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করা কিংবা মিথ্যা ব্লেমের মাধ্যমে তার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করা- আমরা সে ধরনের কোনো কিছু করবো না। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে কোনো ত্যাগী যোগ্য নেতৃত্ব যারা রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তাদের জীবনের সবচেয়ে সোনালি সময়গুলো বিসর্জন দিয়েছে তারা যেন বঞ্চিত না হয়।

জাগো নিউজ: ছাত্রদল কীভাবে পরিচালিত হয়? নিজস্ব গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে নাকি বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনায়?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ছাত্রদল কখনো বিএনপির কমান্ডে পরিচালিত হয় না। এই যে আমি ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট আপনার সঙ্গে কথা বলছি, আমার একটি বাক্যেও কি মনে হয়েছে যে আমি ইতস্ততা ফিল করছি বা হাইকমান্ড মাইন্ড করবে, হাইকমান্ড আমাকে নির্দেশনা দিয়েছে? আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলার সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক মুসলিম হলে, যেখানে ছাত্রলীগের জন্ম সেই হলের সভাপতি ছিলাম। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক ছিলাম, সেখান থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে এখন ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে।

এই নির্বাচন প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় করা হচ্ছে। আগের যে কমিটি ছিল তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন কমিটি করতে। তারা একজন তো বলে না, নতুন কমিটি দেওয়া যাবে না। কিন্তু তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তারেক রহমানকে তারা অনুরোধ করেছে আপনার সিদ্ধান্তকে আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই, আমরা নতুন কমিটি চাই। শুধু তাই নয়, তারা সেই নতুন কমিটিতে সহযোগিতা করছে। আমরা আজ এই যে পার্টি অফিসে আসছি আপনি কোনো জায়গায় নেগেটিভ মন্তব্য শোনেননি। ছাত্রদল ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবং বিগত যে কমিটিগুলো ছিল যে ধারায় তাদের যে নিজস্ব কর্মপন্থা পরিচালিত হয় আমরা ঠিক সেভাবে পরিচালিত হবো। বিএনপির হাইকমান্ড এগুলো নিয়ে কখনোই আমাদের হস্তক্ষেপ করে না। তবে পরামর্শ দেয় যে কখন কী করা উচিত।

জাগো নিউজ: আপনাদের সংগঠনের আর্থিক উৎস কী?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আমরা বিরোধী দলে রয়েছি তো আমাদের এত জৌলুস নেই। আমাদের এখানে যারা রয়েছেন সবাই খুব সুন্দর জীবনযাপন করে। এখানে কেউ অর্থ-বিত্তের মালিক না। আমি সভাপতি আমার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে যেটুকু রয়েছে সেটুকু। আমাদের এক সেকেন্ড সময় নেই অন্যভাবে আর্থিক উপার্জনের। এখানে যারা রয়েছে তাদের কাউকে দেখে মনে হবে না তারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ফ্যামিলির সন্তান। তারা আল্লাহর রহমতে বেশ সচ্ছল এবং তারা ঢাকায় থেকে কেউ টিউশনি করে, কেউ ছোট বিজনেস করে, কেউ পারিবারিকভাবে মাসিক সাপোর্ট নেয়- এভাবেই আমাদের ছাত্রদল পরিচালিত হচ্ছে।

আমরা স্বচ্ছতা নিয়ে রাজনীতি করি। আমরা বলতে পারি আমাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা রয়েছে। হ্যাঁ, শতভাগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কারও পক্ষে চলা সম্ভব নয়। যতক্ষণ এদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা না হবে ততক্ষণ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ছাত্র সংগঠনের গণতন্ত্র চর্চা করা সম্ভব নয়।

‘এখানে শিক্ষার মান দিন দিন নিম্ন থেকে নিম্নগামী হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে সহাবস্থান, শিক্ষার পরিবেশ ফেরানো, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ-নির্যাতন থেকে

জাগো নিউজ: শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কোনো মিশন-ভিশন তুলে ধরবেন কি না?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আমাদের মনের কথাটা বলে দিয়েছেন। আমরাও এ বিষয়ে একটা কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছি। আপনি দেখেন প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়। এটি আপনার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সাধারণ জনগণের কথা। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। এর বিরুদ্ধে ছাত্রদল দ্রুততম সময়ে দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করবো। সেজন্য যদি আমাদের কারাবরণ করতে হয়, রাজপথে রক্ত ঝরাতে হয় প্রস্তুত আছি। আগামী প্রজন্ম বিনির্মাণে ছাত্রদল তার ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবে।

জাগো নিউজ: সারাদেশ জেলা কমিটি, থানা কমিটি, ইউনিয়ন কমিটি যেগুলো আছে এখানে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বের করে আনার কোনো চিন্তা-চেতনা আছে কি না।

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: হাসিনা সরকার আরও কর্তৃত্ববাদী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সেই বাস্তবতায় এই মুহূর্তে কাউন্সিল না করে আমাদের কমিটি হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো যেখানে কাউন্সিলরের বাস্তবতা রয়েছে সেখানে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি দেবো। আর যেখানে সরাসরি নেতৃত্ব প্রস্তুত, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য আমরা সেখানে সেভাবেই নেতৃত্ব নির্বাচন করবো।

জাগো নিউজ: বর্তমান কমিটি গঠনের আগে আপনি কি নিশ্চিত ছিলেন যে আপনি ছাত্রদলের সভাপতি হচ্ছেন?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: না, এরকম কিছু নয়। বাস্তবতা হলো হাইকমান্ড যাকে মনে করবে তাকেই দেবে। সে ধরনের মানসিক প্রস্তুতি ছিল আমার। তখন একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম। যদিও সেই সাক্ষাৎকারে আমার কমিটি নিয়ে কথা বলার ছিল না, কিন্তু তারপরও জানতে চাওয়ায় আমি বলেছি যে হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটা মেনে নেবো।

যদি পার্টি মনে করতো যে না আমাকে এই মুহূর্তে ছাত্রদলের কাজে লাগানো প্রয়োজন নেই, তাহলে সেক্ষেত্রে আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। কারণ মানসিক প্রস্তুতি অনেক বড় বিষয়। আপনি যখন যুদ্ধ করবেন তখন মানসিক প্রস্তুতি হচ্ছে বড়, সেই প্রস্তুতি আমার ছিল।

জাগো নিউজ: আপনি কি মনে করেন আপনার নেতৃত্বে সংগঠন সফল হবে?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: যেহেতু আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই ধরনের যাচাই-বাছাই করেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি পারবো বলেই আমার প্রতি আস্থা রয়েছে, তাই আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জাগো নিউজ: আপনি কি মনে করছেন সফল হবেন?

রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আমার অগাধ আস্থা রয়েছে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শতভাগ সফল হবো ইনশাল্লাহ।

কেএইচ/এএসএ/জেআইএম