নির্বাচন বন্ধে রাষ্ট্রপতি বরাবর ইসলামী আন্দোলনের স্মারকলিপি
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ ও শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলে পদক্ষেপ নিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে গণ-জমায়েত করে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণ শাখা। জমায়েত শেষে ঢাকা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন।
নির্বাচন বন্ধ ও নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে দেওয়া স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘দেশের অধিকাংশ শান্তিকামী নাগরিক একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। কিন্তু বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার একটি একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। আগামী ৭ জানুয়ারি এমনই একতরফা প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের অপরিণামদর্শী প্রস্তুতি চলছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘দেশের অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব দেশকে অনিবার্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। এজন্য আপনার কাছে আমরা শান্তিপ্রিয় দেশবাসীর পক্ষ থেকে বিনীতভাবে দাবি জানাচ্ছি, আপনি ৭ জানুয়ারি ঘোষিত একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বন্ধের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুন। একই সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।’
স্মারকলিপিতে শিক্ষানীতি সম্পর্কে বলা হয়, ‘বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১- এ এদেশে যুগ যুগ ধরে চলে আসা প্রচলিত ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। যা শিক্ষানীতি-২০১০ এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের বিপরীত। এ সিদ্ধান্ত এদেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।’
‘বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামে ইসলাম ধর্ম শিক্ষাকে শুধু সংকুচিত ও উপেক্ষাই করা হয়নি, বরং রীতিমতো ইসলাম শিক্ষার সঙ্গে উপহাস করা হয়েছে। কেননা, ইসলাম ধর্ম শিক্ষাসহ বাংলা সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান পাঠে ইসলামী আকিদা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ যেমন সংকুচিত করা হয়েছে, অপরদিকে ইসলামী আকিদা বিরোধী বিভিন্ন বিষয় ও পরিভাষার অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে কৌশলে। মুসলমানদের আবশ্য পালনীয় পর্দা, দাড়ি সম্পর্কে বিদ্রূপ করা হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘অন্যদিকে ইসলামের মৌলিক শিক্ষাবিরোধী, অপ্রমাণিত ও ভ্রান্ত ডারউইনের বিবর্তনবাদ বিভিন্ন ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকে সংযোজন করা হয়েছে। অথচ এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে পরিত্যাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়িত হলে দেশের আগামী প্রজন্ম নীতি-নৈতিকতা বিহীন গড়ে উঠবে।’
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা জেলা দক্ষিণ শাখা ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ইসলামী যুব আন্দোলন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের সভাপতি মিরাজুল ইসলাম, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
জেএ/কেএসআর/এএসএম