ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

ভোট দেওয়ার জন্য জনস্রোত তৈরি হয়েছে

সায়েম সাবু | প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নির্বাচন ও চলমান রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে মুখোমুখি হন জাগো নিউজের। সরকার যে কোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে নির্বাচন সম্পন্ন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নির্বাচন নিয়ে সংলাপ বা তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা আর নেই বলেও জানান তিনি। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ থাকছে প্রথমটি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু।

জাগো নিউজ: আসন্ন নির্বাচন ঘিরে নানা প্রশ্ন জনমনে। বিরোধী শিবির একতরফা নির্বাচন দাবি করে আন্দোলন করছে। এমন নির্বাচনে আওয়ামী শিবিরে স্বস্তি না অস্বস্তি?

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। সরকার তার রুটিন দায়িত্ব পালন করে মাত্র।

অনেক রাজনীতিবিদ রয়েছেন যাদের মাঠে কোনো অস্তিত্ব নেই, তারাও অনেক কথা বলে আসছেন। এসব কথা মানুষ কতটুকু বিশ্বাস করেন তা বড় প্রশ্ন। নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলকে বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। অমুক শক্তিশালী বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে তো সরকার কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি।

আরও পড়ুন>>‘ইবরাহিম সাহেব জামায়াতের কপালেও চুমু খেতেন’

যেমন- বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তো কোনো বাধা নেই। ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বাকিরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তাদের ইচ্ছায়। অংশ না নেওয়া তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। অনেক দেশেই জনপ্রিয় দলকে নির্বাচনে অংশ নিতেই দেওয়া হয় না। বাংলাদেশে তো তা ঘটছে না।

জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় দেখছি ভোট দেওয়ার জন্য জনস্রোত তৈরি হয়েছে। কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে বা বোমা মেরে জনমত প্রভাবিত করা যায় না।

এরপরেও যারা বলছেন, একতরফা নির্বাচন তাদের কথা কি সত্য? নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বাধা সৃষ্টি করা কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হতে পারে না। সংসদে আইন করে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এরপরেও যারা নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পায়, তখন বুঝবেন তারা আসলে জনগণের সমর্থন পাবে না। বিএনপি তার কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তারা ভয় পায় বলেই নির্বাচন বানচাল করতে চায়। জনগণ তাদের সঙ্গে নেই বলেই বিএনপির হরতাল-অবরোধের এই হাল।

জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় দেখছি ভোট দেওয়ার জন্য জনস্রোত তৈরি হয়েছে। কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে বা বোমা মেরে জনমত প্রভাবিত করা যায় না।

আরও পড়ুন>>জেলখানায় বসেও সংলাপ হতে পারে

জাগো নিউজ: কিন্তু বিরোধীদের ওপর নিপীড়নের যে অভিযোগ রয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে, তাতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করা যায়?

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: বিরোধীরা তো অনেক কথাই বলেন। বিএনপি এত মিথ্যা বলে যে সত্যের কাছাকাছিতেও নেই। ফৌজদারি অপরাধ করলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করলে তাদের ছেড়ে দিতে হবে? এসব অপরাধীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা তো অন্যায় হতে পারে না। সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেশটা তো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে পারে না।

যারা সন্ত্রাস করে তাদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দেশ, জাতির কল্যাণে। শান্তির জন্য বিচার করা হচ্ছে।

বিএনপি ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিল। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স রাখেনি। মিরপুর ও মাগুরার উপ-নির্বাচন সবার জানা। বিএনপি তো গণতান্ত্রিক অধিকারের যে মূল্যবোধ তার সবকিছু ধ্বংস করেছিল। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করেছি।

জাগো নিউজ: নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না নেওয়া সাংবিধানিক অধিকার বললেন। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ কি কখনও বাধার সম্মুখীন হয়েছিল নির্বাচনে অংশ নিতে?

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল, যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আসছে। সেই ১৯৭০ সালের পর থেকেই আপনি এমন চিত্র দেখতে পাবেন।

আরও পড়ুন>>‘একতরফা নির্বাচন হলে সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে’

জাগো নিউজ: ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ২০০৬ সালেও ঠিক তাই। ওই সময়ের সঙ্গে তুলনা করে কী বলবেন?

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: বিএনপি ১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিল। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স রাখেনি। মিরপুর ও মাগুরার উপ-নির্বাচন সবার জানা। বিএনপি তো গণতান্ত্রিক অধিকারের যে মূল্যবোধ তার সবকিছু ধ্বংস করেছিল। আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করেছি। আমরা মানুষকে জাগ্রত করে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা সন্ত্রাসী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছি বলেই ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর ১৫ দিন টিকে থাকতে পারেনি।

বিএনপি হ্যাঁ-না ভোটে জালিয়াতি করেছে। তারা ধারাবাহিকভাবে এ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করেছিলাম। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে ছিলাম আমরা।

কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে আপনি জনগণকে দেখতে পাচ্ছেন? গত ১৫ বছরে আপনি বিএনপির কোনো আন্দোলনে সফলতা দেখতে পেয়েছেন? তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে কে সেটা আগে বিশ্লেষণ করুক। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির অপকৌশল প্রতিহত করেছি। অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করে না।

জাগো নিউজ: ভোট ডাকাতি, রাতের ভোট, মরা মানুষের ভোট এমন অভিযোগও তো আছে আপনাদের বিরুদ্ধে?

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম: ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছেন জিয়াউর রহমান, আর তার হাত ধরেই তো বিএনপির প্রতিষ্ঠা। সেই বিএনপি কী বলবে না বলবে এটি মানুষ বুঝতে পারে।

একজন সামরিক জান্তা যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেছে। সেই দল গণতান্ত্রিক আচরণ করতে পারে না। ষড়যন্ত্রের পথে তাদের যাত্রা। এখনো তারা সে পথেই হাঁটতে চায়।

আর আমরা মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করছি, ধ্বংসের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে চলছি।

এএসএস/এএসএ/এএসএম