ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর

কূটনৈতিক সফলতা-নতুন বার্তা দেখছে না বিএনপি

খালিদ হোসেন | প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ০৮ মে ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাবশালী তিন দেশ জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে নতুন কোনো বার্তা দেখছে না বিএনপি। এ সফরে বিএনপির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলেও মনে করছে তারা। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এখানে কূটনৈতিক বা আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক কিছু ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর ব্যর্থ। কারণ এখানে রাষ্ট্রীয় কোনো সফলতা নেই।

গত ২৫ এপ্রিল সকালে জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৮ মে) ১৫ দিনের টানা সফর শেষে ঢাকার উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করে ৯ মে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। সফরের শুরু থেকেই বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তৃণমূল বিএনপিতেও রয়েছে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো আগেই গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘এই সফরে অর্জন শূন্য। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এ সফর। এসব করে কোনো লাভ হবে না।’

আরও পড়ুন>> ‘ওপর থেকে যত নিচে যাবেন বিএনপিতে তত কমিটেড নেতাকর্মী বেশি পাবেন’

সফর নিয়ে মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা ধরে রাখতে দেন-দরবার করতে বিদেশ সফর করছেন। কিন্তু তাতে তিনি কোনোভাবেই সফল হবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, তারা এ সফর নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা এখন আন্তর্জাতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন। আমাদের লক্ষ্য লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করা। যেহেতু তারা আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন, এটা আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা।

বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন জাগো নিউজকে বলেন, সরকারের টাকা নেই, তাই টাকার সংস্থান করতে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর করছেন। এ সফরের রাজনৈতিক কোনো গুরুত্ব নেই।

আরও পড়ুন>> ৫ সিটি নির্বাচনে বিএনপির ‘উকিল’ মডেলদের উঁকিঝুঁকি!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফর নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্যও। তারা এটাকে ব্যর্থ সফর উল্লেখ করে, এ সফরে কোনো দৃষ্টি রাখার দরকার আছে বলেই মনে করছেন না।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা জাগো নিউজকে বলেন, দেশের মানুষ বিএনপির মূল শক্তি। আমরা দেশের মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী। বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন করছে। পাশাপাশি বিএনপি যতটুকু বিদেশিদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা দরকার তাও রাখছে।

‘সরকারপ্রধানের সফরে বড় এসব শক্তির কাছে তাদের আরেকবার ক্ষমতায় রাখতে সহযোগিতায় চাইবে। সে লক্ষ্যে তিনি নির্বাচনের আগে হয়তো এসব দেশ সফর করছেন। আর দল হিসেবে বিএনপি কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে নজর রাখলেও প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে নজর রাখছে না।’

আরও পড়ুন>> বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাধান্য ২৭ দফা

স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিচ্ছেন। মানুষ যেখানে অসহায়, সেখানে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। তিনি ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তাই বিভিন্ন দেশে গিয়ে নানান চুক্তির নামে তাদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন নির্বাচনের আগে।

আগামীতে ক্ষমতায় থাকতে সহযোগিতা পাওয়ার জন্যই এ সফর উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি রাখার দরকার আছে বলে মনে হয় না।

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে নতুন কোনো কূটনৈতিক বার্তা দেখছেন কি না জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এটা খুবই নিম্ন পর্যায়ের একটা সফর। এখানে কূটনৈতিক বা আওয়ামী লীগের ইতিবাচক কিছু ছিল বলে আমি মনে করি না। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর সফর ব্যর্থ। কারণ এখানে রাষ্ট্রীয় কোনো সফলতা নেই।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, এটা হচ্ছে জনগণের কাছে ওনাদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের জন্য একটা সফর। ওনাদের যে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা নেই, সেটাকে প্রোপাগান্ডার মতো গণমাধ্যম ব্যবহার করে, সরকারি মুখপাত্র ব্যবহার করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে, একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাইছে যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। এটা হচ্ছে সফরের উদ্দেশ্য।

‘সম্পূর্ণ বিফল হয়েছে। কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যেখানেই গেছে সেখানেই শুনতে হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তো? আর ইউকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে বৈঠকের কথা বলে বেড়াচ্ছে এটা কোনো অফিসিয়াল বৈঠক নয়। কমনওয়েলথে দুই প্রধানমন্ত্রী গেছেন, দেখা হয়েছে। আর দুই প্রধানমন্ত্রী দেখা হলে কমপ্লিমেন্ট দেবেন এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড। কিন্তু তারা এটাকে অফিসিয়াল বৈঠক বলে প্রচার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অফিসিয়াল বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।’

কেএইচ/এএসএ/এএসএম