ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

জাতির কাছে অপরিচিত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করেছে সরকার: ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

জাতির কাছে অপরিচিত একজন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাষ্ট্রপতির অবদান রাখার সুযোগ আছে। কিন্তু নতুন রাষ্ট্রপতি কতটা করবেন, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। জাতির কাছে যিনি অতটা পরিচিত নন, তেমন একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হওয়ায় বিএনপি কিছুটা হতাশ। আওয়ামী লীগেও এমন অনেক লোক ছিলেন, যাদের থেকে রাষ্ট্রপতি করলে জনগণও খুশি হতো।’

সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিএনপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক সংকটের এ সময়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ও ঐকমত্য সৃষ্টি করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যেতো বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

আরও পড়ুন>> ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সাহাবুদ্দিন

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যদি চাইতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার গঠন করবে, তাহলে রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে পারতো। যাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়েছে, হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিতভাবেই তিনি রাষ্ট্রপ্রধানের পদে এসেছেন। জনগণের কাছে তিনি পরিচিত নন। রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে তার ভূমিকা কেমন হবে, তা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলতেই পারে।

BNP-2.jpg

নতুন রাষ্ট্রপতি সরকারপ্রধানের খুবই আস্থাভাজন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যেভাবে আসুন, তিনি রাষ্ট্রপতি। তার ভূমিকা দেখার বিষয়। যে প্রক্রিয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সরকারপ্রধানের খুবই আস্থাভাজন। সরকার আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে চায় না। তবে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। সেখানে সরকার এককভাবে নির্বাচন করতে চায়, সেই প্রস্তুতিও তারা নিয়েছেন।’

আরও পড়ুন>> শপথ নিলেন নতুন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন

ফখরুল বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নিলেন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক। যদিও তার নির্বাহী ক্ষমতা তেমন নেই। প্রধানমন্ত্রী ও বিচারপতি নিয়োগই তার প্রধান কাজ। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত থাকে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও বর্তমান পরিস্থিতিতে তার গুরুত্ব কম নয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তার ভূমিকা খাটো করে দেখার কিছু নেই।’

নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে জাতির অন্যরকম এক প্রত্যাশা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে পরিস্থিতি চরমভাবে ঘণীভূত হয়েছে। তার ভূমিকা দেশের মানুষের কাছে, রাজনীতিতে মোটেও হালকা নয়। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রত্যাশা এবার অন্যরকম। যদিও তিনি কি বলবেন, করবেন তা জানা নেই। তিনি দলীয় হবেন কি না, দলের উদ্দেশ্য পূরণ করবেন কি না, নাকি দেশের জন্য কাজ করবেন, সেটা তার ওপর নির্ভর করবে।’

বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে কোনো প্রত্যাশা ছিল না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তিনি খাঁটি আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। তবে মানুষ হিসেবে তিনি খুব ভালো, প্রাণবন্ত মানুষ। তার দিক থেকে তিনি কতটাই বা করতে পারতেন, সেটাও সবারই জানা।’

আরও পড়ুন>> রাজনীতির ভাবনা নেই, হাওরে বেশি সময় কাটাবেন আবদুল হামিদ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসম্য আনা হবে- দলের এমন প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এটা হওয়া উচিত। একটা ব্যক্তির কাছে সর্বময় ক্ষমতা থাকতে পারে না। সেজন্যই আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য করার কথা বলছি।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে আবারও স্পষ্ট করেন বিএনপি মহাসচিব। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে সংকট সমাধানে। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়কের প্রেসক্রিপশন তো আওয়ামী লীগের ছিল, তারাই বাদ দিয়েছেন।’

আগামী দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন চলছে, সামনে আন্দোলন আরও বেগবান হবে। সরকারের আচরণেই নির্ভর করবে বিএনপির আন্দোলনের ধরন কী হবে।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এএএইচ/এমএস