খালি মাঠে আমরা গোল দিতে চাই না: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলনের খেলায় তো পরাজিত হয়ে গেছেন, আর পারবেন না। আন্দোলনের বেলা চলে গেলো। আর বাকি আছে নির্বাচন। আসেন নির্বাচনে মোকাবিলা হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত, আপনারাও প্রস্তুত হোন। খালি মাঠে আমরা গোল দিতে চাই না, দুর্বল প্রতিপক্ষ চাই না।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কামরাঙ্গীরচর সরকারি হাসপাতাল মাঠে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এত সুন্দর পরিবেশ, হাজার হাজার শিক্ষার্থী। মঞ্চে এত ভিড়, ধারণ করতে পারেনি। আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেন। আমাকে পাঁচবার ড্রেসিং করতে হয়েছে। আমি তো সেটা বলিনি। এসব নিয়েই আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে আমি যাচ্ছি। প্রতিদিন পার্টি অফিসে আসি। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে।
তিনি বলেন, পেছনে এত লোক কেন দাঁড়িয়েছেন? আমাদের এত নেতার দরকার নেই। সরে যান। ছাত্র নেতারা এত বড় নেতা হয়ে গেছেন? তারা মঞ্চে কেন? এটা আওয়ামী লীগের মিটিং। আমি যখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম তখন আওয়ামী লীগের মঞ্চ হতো বায়তুল মোকাররমের সামনে। আমি সভাপতি হয়ে একদিনও মঞ্চে উঠতে পারিনি, বক্তৃতা-তো দূরের কথা। আর এখন আমার ছাত্র ভাইদের জ্বালায় মঞ্চ ভেঙে পড়ে। সব প্রাক্তন নেতা! ওয়ার্ড শাখায় কোনো সময় সেক্রেটারি ছিল, তিনিও এখন প্রাক্তন ছাত্রনেতা। সব মঞ্চে উঠছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের মধ্যে থেকে, সরকারের মধ্যে থেকে, দলের পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, মাস্তানি, জমি দখল, এসব যারা করবে, মাদক ব্যবসা যারা করবে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সঙ্গে আছে, তাদের আওয়ামী লীগ করার সুযোগ নেই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সব থানা ও ওয়ার্ডের কমিটি দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা কমিটিগুলো দিয়ে দেন। আওয়ামী লীগের লোকের অভাব নেই, আওয়ামী লীগের বহুলোক, ডাক দিলেই হাজার হাজার লোক। আওয়ামী লীগে খারাপ লোক এনে পার্টির নেতা করার কোনো দরকার নেই। একটা খারাপ লোক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। একটা খারাপ লোকের জন্য গোটা পার্টির দুর্নাম হয়।
‘নামাজ হচ্ছে মসজিদে আজান দিচ্ছে, স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে, তখন যে মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছে, আমরা নামাজ পড়ি, আওয়ামী লীগের ছেলেরা স্লোগান দিচ্ছে। এগুলো শিখতে হবে। এসব বিষয়ে ট্রেনিং দিতে হবে। বাজে লোকের প্রয়োজন নেই, ভালো লোকের দরকার। ভালো লোক দিয়ে কমিটি করুন। ত্যাগী লোকদের দিয়ে কমিটি করুন। বসন্তের কোকিল খারাপ সময়ে থাকবে না। বসন্তের কোকিল বসন্তে আসে, মৌসুমে আসে মৌসুম চলে গেলে আবার চলে যায়। এসব কথা এখন বলা বেশি প্রয়োজন।’
সমাবেশের শুরুতেই ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপনারা কেমন আছেন। জানি একটু ভালো নেই। আমরা পরিস্থিতিকে অস্বীকার করছি না। শেখ হাসিনা দিন-রাত পরিশ্রম করছেন, যেন আপনাদের দুঃসময় কেটে যায়। শেখ হাসিনা রাত জেগে মানুষের কথা ভাবেন। পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার মতো এতো ভালো মানুষ, এতো সৎ মানুষ আরেক জন আমরা দেখিনি। নিজের চিন্তা নেই, সংসারের চিন্তা নেই, ছেলে মেয়েদের চিন্তা নেই। ছেলে মেয়েদের জন্য নেই হাওয়া ভবন।
তিনি বলেন, খেলা-তো হবেই। বিএনপির উঁচু গলা নিচু হয়ে গেছে। কী খেলবো তাদের সঙ্গে? বিএনপিকে বলি- ঢাল নাই, তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দারের সঙ্গে খেলতে চাই না। সেই রকম পার্টি দরকার, প্রতিপক্ষ দরকার।
বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের খেলায় তো পরাজিত হয়ে গেছেন, আর পারবেন না। আন্দোলনের বেলা চলে গেলো। আর বাকি আছে নির্বাচন। আসেন নির্বাচনে মোকাবিলা হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত, আপনারাও প্রস্তুত হোন। খালি মাঠে আমরা গোল দিতে চাই না, দুর্বল প্রতিপক্ষ চাই না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মহিউদ্দিন জালাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ। শান্তি সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
এসইউজে/আরএডি/জেআইএম