যুবলীগের মহাসমাবেশ ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাজ সাজ রব
১১ নভেম্বর শুক্রবার যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুব মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ উপলক্ষে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজন ঘিরে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
জানা গেছে, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মহাসমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি যুবক উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। অনুষ্ঠান সফল করতে এক সপ্তাহ যাবৎ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লেকের পূর্বপ্রান্তে মঞ্চ নির্মাণসহ সার্বিক প্রস্তুতি কার্যক্রম চলছে।
প্রতিদিন অসংখ্য শ্রমিক উদ্যানের ভেতরে চলাচলের বিভিন্ন রাস্তা মেরামত, আগাছা ছেঁটে ফেলা, যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গোটা উদ্যানজুড়ে সাজ সাজ রব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় এক সপ্তাহ আগের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আর এখনকার উদ্যানের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। গোটা উদ্যান এখন ঝকঝকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।
আরও পড়ুন: যুবলীগের মহাসমাবেশ প্রস্তুতি সভায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
মাবেশের চারদিন বাকি থাকলেও এখন থেকেই উদ্যানে প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। টিএসসির অদূরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশপথসহ একাধিক প্রবেশপথে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞার ফলে উদ্যানে নিয়মিত যারা প্রাতঃভ্রমণ করেন তারা বিপাকে পড়েছেন। অনেকে অনুমতি নিয়ে ব্যারিকেড ডিঙিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলেও এ সংখ্যা খুব কম। ফলে গোটা উদ্যান জুড়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, যুবলীগের সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি যুবক উপস্থিত থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশাল এ জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। আর তাই মহাসমাবেশে যেন কোনো ধরনের নাশকতা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারি করছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, উদ্যানের বিভিন্ন প্রবেশপথে নিয়মিত দায়িত্বরত আনসার সদস্যারা অবস্থান করছেন। বাঁশের বেড়া দিয়ে প্রবেশপথ আটকে দেওয়া হয়েছে। কেউ এলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়মিত হাঁটতে আসা ফজলুল হক বলেন, ‘১১ নভেম্বর মহাসমাবেশ হলেও এত আগে থেকে উদ্যানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত হয়নি।’ তবে মহাসমাবেশ উপলক্ষে উদ্যানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের প্রশংসা করেন তিনি। উদ্যানে এর আগে এমন সুন্দর পরিবেশ কখনো দেখেননি বলে জানান ফজলুল হক।
আরও পড়ুন: রাজপথে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে যুবলীগই যথেষ্ট: পরশ
এরই মধ্যে সংগঠনের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে নগরজুড়ে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুব মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি ১০ দিন আগে থেকেই নিতে শুরু করেছে যুবলীগ। যুব মহাসমাবেশের মাধ্যমে সরকারবিরোধীদের নিজেদের শক্তির জানান দিতে চান সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এ লক্ষ্যে প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। প্রস্তুতি সভা হচ্ছে দেশের সব জেলা-উপজেলায়।
গত ২২ অক্টোবর যুব মহাসমাবেশ সফল করতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটোরিয়ামে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও সব শাখার সমন্বয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সভায় ১০টি উপকমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এগুলো হলো-দপ্তর উপকমিটি, সাংস্কৃতিক উপকমিটি, স্বাস্থ্য উপকমিটি, তথ্যপ্রযুক্তি উপকমিটি, শৃঙ্খলা উপকমিটি, প্রচার-মিডিয়া উপকমিটি, প্রকাশনা উপকমিটি, অভ্যর্থনা উপকমিটি, আপ্যায়ন উপকমিটি, মঞ্চ ও সাজ-সজ্জা উপকমিটি।
সভায় শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘আপনারা জানেন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়। ওদের এই নৈরাজ্যের জবাব সংগঠন হিসেবে যে যুবলীগ একাই দিতে পারে তা ১১ নভেম্বর এই যুব মহাসমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করবো। আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা, আপনারা এই মহাসমাবেশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সর্বসাধ্য দিয়ে ১১ নভেম্বর সফল করবেন। অর্থাৎ যুবলীগকে সফল করার দায়িত্ব এখন আপনাদের কাঁধে। আমি জানি আপনারা পারবেন। যুবলীগ অসাধ্য সাধন করা এক সংগঠন।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় যুবলীগের সমাবেশ ১১ নভেম্বর
যুব মহাসমাবেশে সারাদেশ থেকে অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। তিনি বলেন, ‘আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আগামী ১১ নভেম্বর আবারও প্রমাণ হবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছেন। বিশেষ করে দেশের যুবসমাজ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল তা আমাদের যুব মহাসমাবেশে প্রমাণ হবে। যুবলীগ মিডিয়া ট্রায়ালে নয়, সত্যিকার অর্থে যুব মহাসমাবেশে লাখ লাখ যুবকের উপস্থিতি নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করবে রাজপথ বিএনপির নয়, যুবলীগ তথা আওয়ামী লীগের।’
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত গোটা বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে তার জবাব যে যুবলীগ সংগঠন হিসেবে যেকোনো সময় দেওয়ার সক্ষমতা রাখে সেটার প্রমাণ এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাধীনতাবিরোধীরা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তাতে রাজনৈতিক শক্তি এবং সামর্থ্য প্রদর্শন করা এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এমইউ/ইএ/এএসএম
সর্বশেষ - রাজনীতি
- ১ ১৬ বছর দিল্লি ছাড়া হাসিনাকে কোনো দেশ সমর্থন করেনি: রিজভী
- ২ নির্বাচনের জন্য ৪ থেকে ৬ মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়
- ৩ তাবলিগের দু’পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
- ৪ জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য হলেন আরও ৪০ জন, মোট ১৪৭
- ৫ বিএনপিকে ত্রাসের রাজনীতি থেকে সরে আসার আহ্বান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের