গণহত্যার সংখ্যা হয় অনুমানের ভিত্তিতে : হানিফ
বিশ্বের সব দেশেই হণহত্যার সংখ্যা অনুমানের ভিত্তিতে করা হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়াস ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির জাতীয় সম্মেলন ২০১৬ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই নিহতের সংখ্যা একজন দু’ জন করে হিসেব করে কখনও বের করা যায় না। সারা পৃথিবীতে এই ভাবে যে গণহত্যা হয়েছিলো সেটা কখনও একজন দু’জন করে গুণে সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি। একটা অনুমানের ভিত্তিতে সংখ্যা নিরুপণ করা হয়।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, মক্তিযুদ্ধের সময় সারা দেশে এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে লাশ আর লাশ ছিল। লাশের মিছিল ছিল। নদীতে, পুকুরে এখানে-সেখানে লাশ ভাসত। গণহত্যার চিহ্ন যেন সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করে পাকিস্তানের অপকর্মকে পাকিস্তান যেভাবে অস্বীকার করে আসছে। সেই পাকিস্তানের অপকর্মকে জায়েজ করার জন্য বিএনপি এবং জামায়াত একইসুরে তাদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে যখন এই রকম গণহত্যা হয়েছিল। জার্মানিতে নাৎসী বাহিনীর দ্বারা ইহুদি হত্যা হয়েছিল, ২০১০ সালে রুয়ান্ডাতে গণহত্যা হয়েছিল, এর আগে আনবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ জাপানে গণহত্যা চালিয়েছিল। এ রকম আরও অনেক গণহত্যা হয়েছে। সেখানে একজন-দুজন হিসেবে করে সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি। এটা অনুমানভিত্তিক সংখ্যায় নির্ধারণ করা হয়েছিল।
হানিফ আরও বলেন, মানুষের মৃত্যুর ধরণ দেখে, মিছিল দেখেই হয়তো সংখ্যাটাকে অনুমানভিত্তিকই করা হয়েছে। খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। পাকিস্তানের নির্দেশে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশের অপ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, পাকিস্তান যেমন তাদের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চায় নাই। তারা এখন পর্যন্ত স্বীকার করে না, জামায়াত ইসলামী তাদের ভুল স্বীকার করে না। ওই পাকিস্তানের দোসর হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া আজকে তাদের পক্ষ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে গোটা জাতির মধ্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছনি।
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভীর একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানিয়ে দিতে চাই ইতিহাস বিকৃতি করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একদিনে হন নাই।
হানিফ বলেন, এই ধৃষ্টতা দ্বিতীয়বার না দেখানোর জন্য আমরা অনুরোধ করে যাচ্ছি। এই জাতির পিতাকে নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটাক্ষ করে এই ধৃষ্টতা যদি ভবিষ্যতে কেউ দেখায় তাহলে বাংলার জনগণ তাকে ক্ষমা করবে না। তাদেরকে সমুচিতভাবে জবাব দিয়ে স্বাধীনতা ও ইতিহাস বিকৃতিকারীদেরকে এই বাংলাদেশ থেকে চিরদিনের জন্য উৎখাত করবে।
ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির মহাসচিব মুফতি তাজুল ইসলাম ফারুকী প্রমুখ।
এএসএস/এসকেডি/পিআর