এ সরকার থেকে গণতান্ত্রিক বাজেট আশা করা যায় না: রুমিন ফারহানা
অগণতান্ত্রিক সরকার থেকে কখনো গণতান্ত্রিক বাজেট আশা করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।
তিনি বলেছেন, যাদের ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা হয় তাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয় না। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে বাজেট প্রণয়ন করা হয়। এখানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। কারণ আগে থেকেই বাজেট নির্ধারিত হয়।
রোববার (৫ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বণিক বার্তা ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘জন-বাজেট সংসদ ২০২২’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, বাজেট অধিবেশনে বাজেট নিয়ে আলাপ-আলোচনা না করে সরকারের গুণকীর্তন করা হয়। অল্প যে কয়জন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য আছেন তারা কথা বলে যান। কিন্তু তাদের কথা সরকারের কান পর্যন্ত পৌঁছায় না। সর্বোপরি একটা অগণতান্ত্রিক সরকার থেকে কখনো একটি গণতান্ত্রিক বাজেট আশা করা সম্ভব নয়। কারণ তারা বাজেট নিয়ে জনগণের জবাবদিহিতার মুখোমুখি নয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি স্বাস্থ্য খাতের দিকে তাকাই। আমরা দেখবো- অদক্ষতা আছে, অব্যবস্থাপনা আছে, দুর্নীতি আছে। সেগুলোকে সরিয়ে রেখেও যদি আমরা বরাদ্দের দিকে তাকাই তাহলে দেখব, স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু রাষ্ট্রীয় ব্যয় এই মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্ন। বাংলাদেশের বাজেটের জিডিপির অনুপাতে মাত্র ০ দশমিক ৯ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের ন্যূনতম স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার কতটুকু মনোযোগী এটি তার একটি বড় উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, সরকার মনে করে বছরে কিছু বয়স্ক ভাতা, কিছু প্রতিবন্ধী ভাতা ও কিছু সাহায্য করেই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। বিষয়টা কিন্তু একেবারেই বাস্তবতা বিবর্জিত। চলতি বছরে কাগজে-কলমে এক লাখ সাত হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা খাতে। অথচ এতে যুক্ত আছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর ভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। এমনকি যে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে সে ঋণের সুদও এটার মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। এভাবে শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভালো রাখা সম্ভব না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. এম এম আকাশ, রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।
আল সাদী ভূঁইয়া/আরএডি/জিকেএস