ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

ডিএসসিসির ৭৩ নং ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন, প্রার্থী নেই বিএনপির

মুসা আহমেদ | প্রকাশিত: ১০:০৫ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২১

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচন হবে আগামী ৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)। এ নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চাইতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। একই দিন ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর পদে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অন্য প্রার্থী না থাকায় এই ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আয়েশা মোকাররম।

এই দুটি ওয়ার্ডেই প্রার্থী নেই বিএনপির। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এভাবে নির্বাচনে মাঠ ছেড়ে দিলে সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে না। একদিন বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। দেশে গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটবে। তাই সংগঠনকে বাঁচিয়ে রাখতে নির্বাচনে প্রার্থী রাখা দরকার ছিল।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দুই নেতা জানান, ২০২৩ সালের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই নির্বাচনকেই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বিএনপি এবং সে লক্ষ্যেই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। সেজন্য এখন উপ-নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন না তারা।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) একটি মেয়র ও ৭৫টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জিন্নাত আলী এবং ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে শফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হন। এর মধ্যে গত ২১ মে শফিকুল ইসলাম এবং গত ৪ জুলাই জিন্নাত আলী মারা যান। তারা মারা যাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী ওয়ার্ড দুটির কাউন্সিলর পদ শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয় নির্বাচন কমিশন। এজন্য গত ২ সেপ্টেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা (সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, ঢাকা) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (থানা নির্বাচন অফিসার, সবুজবাগ) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৭ অক্টোবর সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে সেখানে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

২২ নম্বর ওয়ার্ড
হাজারীবাগের মনেশ্বর রোড, মনেশ্বর লেন, বাড্ডানগর লেন, বোরহানপুর লেন, কুলাল মহল লেন, কাজীরবাগ লেন, নবীপুর লেন, হাজারীবাগ লেন, হাজারীবাগ রোড, কালুনগর, এনায়েতগঞ্জ, গণকটুলী, ভাঙ্গী কলোনি, নীলাম্বর সাহা রোড, ভাগলপুর লেন নিয়ে ডিএসসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৫৯ হাজার।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৪ জুলাই ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিন্নাত আলী মারা যাওয়ার কিছুদিন পরই এ ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনের সুর ওঠে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের চার নেতা কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। পরে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আয়েশা মোকাররম। তিনি এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী।

জানতে চাইলে আয়েশা মোকাররম জাগো নিউজকে বলেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আমি একাই প্রার্থী ছিলাম। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছি। আগামী ১০ অক্টোবর কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। শপথ নেওয়ার পর এলাকার সবাইকে নিয়ে ওয়ার্ডের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করবো।

৭৩ নম্বর ওয়ার্ড
রাজধানীর নন্দীপাড়া বাজার, দক্ষিণগাঁও নয়াবাগ, কুসুমবাগ, দক্ষিণগাঁও পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণগাঁও, দক্ষিণগাঁও দাসপাড়া, দক্ষিণগাঁও ৬ নং রোড, দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ, বেগুনবাড়ী, মানিকদিয়া, উত্তর মানিকদিয়া চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকা নিয়ে ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড। ২১ মে কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম মারা গেলে এ ওয়ার্ডেও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে ইসি। আসন্ন উপ-নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন প্রয়াত শফিকুলের ভাই নজরুল ইসলাম। তার নির্বাচনী প্রতীক করাত। অবশ্য আওয়ামী লীগের সমর্থনে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন মো. জিয়াউল হক (রেডিও)। এছাড়া ওয়ার্ডটিতে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে উজ্জ্বল (লাটিম) ও মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম (ঠেলাগাড়ি) নামে আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ওয়ার্ডটিতে ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৬০০।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওয়ার্ডে খুবই জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের প্রচারণা চলছে। প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আশা করি বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা ডিএসসিসির একটি নবগঠিত ওয়ার্ড। এখানে রাস্তাঘাটসহ অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। আশা করি আমি বিজয়ী হলে এ কাজগুলো করতে পারবো।’

ডিএসসিসি ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণগাঁওয়ের বাসিন্দা বিএনপি সমর্থক খলিল রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে ভোট ঘিরে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে মানুষের মধ্যে উৎসাহ কাজ করতো। কিন্তু এখন তা নেই। শুধু ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরই নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়। বিএনপির নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটাররা নিজেদের কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্ত। এর অন্যতম কারণ হলো, ভোটে মানুষের আস্থা নেই। এভাবে চলতে থাকলে দেশে গণতন্ত্র বিলীন হয়ে যাবে।

দুই ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী না থাকা প্রসঙ্গে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক আবদুস সালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে যায় না। এখন নির্বাচন মানে টাকার অপচয়। তাই প্রার্থিতা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

এমএমএ/এইচএ/জিকেএস