ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

জিয়া হত্যাকাণ্ডেরও তদন্ত চান নৌপ্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২১

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হলেই তার কফিনে মরদেহ ছিল কি না তা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, বারডেম আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত হলেই কফিনের মধ্যে কী ছিল বেরিয়ে আসবে। সেদিনের ওই ঘটনায় অনেক মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই সময়ে যারা বেঁচেছিলেন তারা পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সেগুলো এখন বড় প্রশ্ন। কাজেই সেটারও রহস্য উদ্ঘাটন করা দরকার।’

‘বিএনপি একটি পলিটিক্যাল ডেডবডিতে পরিণত হয়েছে’ মন্তব্য করে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীর তথ্যভিত্তিক বক্তব্যকে হাস্যকর বলছেন; তার চিকিৎসা করানো দরকার। এটা দিবালোকের মতো আমরা দেখতে পাচ্ছি।’

কিছু মতলববাজ সরকার ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধির রাজনীতিতে কিছু মতলববাজ তাদের মতলব বাস্তবায়ন করতে পারছে না বলেই সরকারের কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সঙ্গে সরকারের একটা দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা করছে। যেন সরকারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন যেন না হয় সেজন্য সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দ্বন্দ্ব তৈরির জন্য মতলববাজরা মাঠে নেমেছে। তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তারা আমাদের সঙ্গেই আছে। আমাদের সঙ্গে থেকেই তারা ছুরিকাঘাত করতে চায়।’

‘জিয়া পরিবার অপরাধী ও খুনি পরিবার, তারা এসবের ফল ভোগ করছে’ মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের একটি হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্য কত হত্যা করেছেন জিয়াউর রহমান। যদি সেনাবাহিনীর মধ্যেই চিন্তা করি, ১৮টি ক্যু হয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করতে শত শত নয়, হাজার হাজার সেনাসদস্যকেই হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করতে শুধু অপরাধীদের পুনর্বাসন করেনি। বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে; কিন্তু তিনি (জিয়াউর রহমান) বাঁচতে পারেননি।’

‘অপরাধ ঢাকতে জিয়া যে অপরাধ করেছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, এ পরিবারটি একটি অপরাধী ও খুনি পরিবার হিসেবে দেশের মানুষের কাছে চিহ্নিত হয়েছে। আজ তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়ে অপরাধী হয়ে কারাবরণ করছেন। তার এক সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে মানি লন্ডারিং মামলায় পলাতক থেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেকজন পলাতক আসামি হিসেবে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। কী করুণ পরিণতি হয়েছে এ পরিবারের! দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্ক্ষিত গর্বের জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে সেই গর্ব ও অহংকারের জায়গায় আমাদের নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এখন আর দরিদ্র দেশ নই। ঋণগ্রস্ত দেশ নই। আমরা এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি। আমরা এখন পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি। এ করোনা মহামারিতেও বিনা চিকিৎসায় কেউ মারা যায়নি। আমাদের কোনো শিশু এখন স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা মানুষের দোরগোড়ায়। গ্রামগুলো আজ বর্ণিল হয়েছে। গৃহহীনদের ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। যেই বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র পেছনে ঘুরতো ঋণের জন্য, সেই বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিচ্ছে। এই বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের মঞ্জুরির জন্য তদবির করতো, সেই বাংলাদেশ এখন সুদানকে মঞ্জুরির অর্থ দিচ্ছে।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সভাপতি অধ্যাপক মীর নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. এস এ মালেক, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক মুর্তাজা কে আই কাইয়ুম চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ বারডেম শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এসইউজে/এআরএ/জেআইএম