ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

মওদুদের এলাকায় বিএনপির হাল ধরবেন কে?

খালিদ হোসেন | প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ১৭ এপ্রিল ২০২১

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জীবদ্দশায় নোয়াখালী-৫ সংসদীয় আসন নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে বেশি মাথা ঘামাতে হয়নি। এই বর্ষিয়ান রাজনীতিকই আসনটিতে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিএনপির হয়ে। সব সংসদ নির্বাচনে জিততে না পারলেও ওই এলাকায় মওদুদ অন্যতম জনপ্রিয় নেতাই ছিলেন। তার প্রভাব ছিল জেলার অন্য সংসদীয় আসনগুলোতেও। মওদুদের মৃত্যুর পর এখন সেই এলাকা নিয়ে চলছে আলোচনা, কে ধরবেন নোয়াখালী-৫ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির হাল?

কবিরহাট এবং কোম্পানীগঞ্জ, দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত নোয়াখালী-৫ আসন। এটি সংসদের ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়দের কারও কারও ধারণা, এ আসনটিতে যে প্রার্থী জয় পান, তার দল সরকার গঠন করে। ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের সময় থেকেই এ আসনে লড়ে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও মওদুদ আহমদ। যেবার মওদুদ জিতেছেন, সেবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে, যেবার ওবায়দুল কাদের জিতেছেন, সেবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে।

গত ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মওদুদ মারা যান। ১৯ মার্চ কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। মওদুদের মৃত্যুর পর থেকেই আলোচনা ওঠে, ই আসনে ওবায়দুল কাদের বা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কে দাঁড়াবেন বিএনপির হয়ে? কার নেতৃত্বে এক থাকবে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা?

বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের মতে, এই ভিআইপি এলাকায় বিএনপির নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আলোচনায় রয়েছেন মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ এবং তার স্নেহভাজন হিসেবে পরিচিত দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, একাধিকবার এ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ। বিএনপি বা আওয়ামীবিরোধী রাজনীতিতে তার অবস্থান এতটাই সুদৃঢ় ছিল যে, তাকে বাদ দিয়ে অন্য কেউ বিএনপি বা দলীয় নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হবার বিষয়টা চিন্তাও করতেন না। কেউ কেউ চেষ্টা করলেও মওদুদের ব্যক্তিত্ব ও উচ্চতার সামনে অনেকটাই ম্লান হয়ে যেতেন। তারপরও শূন্যস্থান পূরণ হবে, এটাই স্বাভাবিক।’

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, দেশে এই মুহূর্তে যেহেতু নির্বাচন নেই, সেহেতু যারাই মওদুদ আহমদের বিকল্প হতে বা এই এলাকার নেতৃত্ব দিতে চান, তাদের অবশ্যই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের আস্থা অর্জন এবং দলের শীর্ষ নেতাদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের স্ত্রী ও কবি জসিমউদ্দীনের কন্যা হাসনা মওদুদ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদের নাম শোনা যাচ্ছে।

moudut1

জানা গেছে, এলাকায় হাসনা মওদুদের পরিচিতি রয়েছে বেশ। এই এলাকায় মওদুদ আহমদ বারবার নির্বাচন করায় জনগণের সঙ্গে তারও সুসম্পর্ক হয়েছে। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে সূত্র জানায়। মওদুদ আহমদের মৃত্যুর পর তার দাফনের পূর্বে হাসনা মওদুদ জানিয়েছেন, মওদুদ আহমদের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণে তিনি কাজ করে যাবেন। এছাড়া তিনি নিজেও একসময় সংসদ সদস্য ছিলেন এবং মওদুদ আহমদের পক্ষে এলাকা দেখাশোনা করতেন।

আবার বিএনপি যেহেতু তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্বের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, সেহেতু সাবেক ছাত্রনেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন অনেকটাই। দলের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের অনেকেই তাকে স্নেহ করেন এবং তার ওপর তাদের আস্থা রয়েছে। বিশেষ করে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের আস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। আর পরবর্তী নির্বাচন হতে যেহেতু এখনো অনেক দেরি, তাই মওদুদ আহমদের শূন্যস্থানে তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্বকেই বিএনপির হাইকমান্ড বেছে নিতে চায়। সেক্ষেত্রে বজলুল করিম চৌধুরীই চলে আসতে পারেন এ এলাকার নেতৃত্বে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই আসনের বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটির অধিকাংশ নেতাকর্মীরা আবেদকে নেতৃত্বে চান। এছাড়া আবেদকে দেখে রাখার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকেও নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র জানায়, হাসনা মওদুদ ও বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ছাড়া আপাতত অন্য কেউ নেই, যিনি মওদুদের এলাকায় বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন। এই দুজন যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এলাকার নেতা-কর্মীদের পাশে থাকেন তবে তৃতীয় পক্ষের কেউ আসনটিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপির কাণ্ডারী হিসেবে কাকে ভাবা হচ্ছে- জানতে চাইলে বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।’

কেএইচ/ইএ/এইচএ/এমএস