ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

খালেদার উপসর্গ ‘একটুখানি জ্বর’, নিয়ন্ত্রণে ডায়াবেটিস

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২১

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গত রোববার (১১ এপ্রিল) করোনাভাইরাস রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বলছেন— ‘আজ বৃহস্পতিবার তার আক্রান্ত হওয়ার সপ্তম দিন। তিনি এখন আক্রান্তের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করছেন।’

কোভিডের দ্বিতীয় সপ্তাহকে ক্রিটিক্যাল উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) নতুন যে একটুখানি উপসর্গ দেখা দিয়েছে, সেটা হলো গতকাল (বুধবার) রাতে একটু জ্বর উঠেছিল। সেটা থার্মোমিটারে ১০০-এর মতো ছিল। আজ সকালেও উনার একবারের মতো একটু জ্বর উঠেছে। সেটা থার্মোমিটারে ১০০ ছুঁয়েছে। এই জ্বর কিছুক্ষণ ছিল।’

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের একটি টিম (তিন সদস্য) তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যান। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে এ তথ্য জানান টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই অসকালটেন্ট পরে আসছি। এই মাত্র উনার চেস্ট পরীক্ষা করেছি। যেহেতু চেস্ট ক্লিয়ার আছে। আমরা মনে করছি— উনি ভালো স্টেবল আছেন।’

ডায়াবেটিস ও আর্থাইটিসের অবস্থা সম্পর্কে ডা. সিদ্দিকী বলেন, ‘ডায়াবেটিসের ব্লাড সুগার এখন খুব ভালো কন্ট্রোলে আছে। আমরা প্রতিদিন ব্লাড সুগার তিনবার মনিটর করছি। সেই অনুযায়ী আমরা ট্যাবলেট ও ইনস্যুলিন দিয়ে ব্লাড সুগার কন্ট্রোল করছি। আর্থাইটিসের উনার ফিজিওথেরাপি চলছে। আরও যেসব চিকিৎসা দরকার, সেগুলোও সবই চলছে।’

তিনি বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) কোভিড সংক্রান্ত মানসিক অবস্থা ভালো। উনি মানসিকভাবে বেশ স্টেবল আছেন এবং যথেষ্ট ভালো আছেন।’

ডা. এফ এম সিদ্দিকী জানান, লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমানসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত পর্যবেক্ষণ টিমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) আজকে আক্রান্ত হওয়ার সপ্তম দিন। কোভিডের পরিভাষায় তিনি এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করছেন। আমি আগেও বলেছি যে, কোভিডের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। কোভিডের যত সাবধানতা, যত জটিলতা সেগুলো সাধারণত সেকেন্ড উইকেই হয়। সেজন্য আমরা আরেকটু সাবধানতা অবলম্বন করতে চাই।’

jagonews24

‘তার সব পরীক্ষা করা হয়েছে। শুধু সিটি স্ক্যানটা করানো হচ্ছিল না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সিটি স্ক্যানটা করিয়ে ফেলব। এছাড়া বাকি সব যেমন— বায়ো-কেমিক্যাল প্যারামিটারস, ফিজিক্যাল স্ট্যাটাস, অক্সিজেন স্যাচুরেশন এবং অ্যাপেটাইট, পালস, ব্লাড সার্কুলেশন অন্যান্য সব দিকে তিনি মোটামুটি ভালো আছেন।’

সিটি স্ক্যান কোন হাসপাতালে করানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোথায় সিটি স্ক্যান করাবো তার ব্যবস্থাও আমরা করে রেখেছি। যখন করব তখন আপনারা জানতে পারবেন।’

এফ এম সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘কোভিডে কখনই আপনি আগে থেকে বলতে পারবেন না, কন্ডিশন কেমন হবে। এটা দ্রুত পরিবর্তনশীল একটা রোগ। তবুও আমরা দ্রুত সিটি স্ক্যান করাব। আমরা যদি সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে মনে করি যে, বাসায় রেখে চিকিৎসা করাটা তার জন্য ভালো হবে, তাহলে বাসায় রাখব। সিটি স্ক্যান দেখে যদি মনে হয় দু-তিনদিন বা কয়েক দিনের জন্য হাসপাতালে অবজারভেশনে রাখা দরকার-আমরা সেটাও করব। আমাদের ডিসিশনটা নির্ভর করবে সিটি স্ক্যানের রিপোর্টের ওপর।’

এর আগে গত ১১ এপ্রিল করোনা রিপোর্ট পজিটিভি হওয়ার পরপরই বিকেলে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত এই টিম গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এর চারদিন পর আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় তারা বিভিন্ন রিপোর্ট পর্যালোচনা করলেন। চিকিৎসক টিম আজ বিকেল ৪টায় ‘ফিরোজায়’ প্রবেশ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে তার বেরিয়ে আসেন।

এরপর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন চিকিৎসকরা। এসময় ডা. এফ এম সিদ্দিকীর সঙ্গে টিমের সদস্য বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আব্দুস শাকুর খান, ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং ডা. আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, সিটি স্ক্যান করানোর জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হসপিটালে (সাবেক অ্যাপোলো হসপিটাল) নেয়া হচ্ছে বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তবে এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল খানও এ বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন। তবে খালেদা জিয়ার বাড়ির আশপাশের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে দেখা গেছে।

কেএইচ/এএএইচ/এএসএম