স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান ফখরুলের
সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত করোনার এই ভয়াবহতার কারণে আমরা মনে করছি যে, এই মুহূর্তে সমাবেশ-টমাবেশ বন্ধ করা দরকার। যে কারণে আমরা সব স্থগিত করছি।’
‘সারা দেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের প্রতি একটাই অনুরোধ থাকবে- সবাই মাস্ক পরবেন, সবাই নিরাপদ যে দূরত্ব সেটা বজায় রাখবে এবং সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। অতিরিক্ত ভিড়ে গিয়ে নিজেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না।’
একই সঙ্গে দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমার একজন সিনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। উনি তো আমার ওপরে রেগেই গেলেন এরকম যে, এখনও কেন আপনারা এই সমস্ত করছেন, এই মুহূর্তে বন্ধ করেন এগুলো। গোটা জাতি আজকে ঝুঁকির মধ্যে আছে। ভয়াবহ আক্রমণ করছে এই ভাইরাস।’
‘তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করে করোনার দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং সংক্রমণ কম হয় তার ব্যবস্থা করা।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো সরকারকে সব কর্মসূচি, সব অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা বিশ্ব করোনা সংক্রামণ মোকাবিলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কিছুদিন আগে আমি সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম সবাই মাস্ক পরে, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। সেখানে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা নেই। সেটা করতে তারা সক্ষম হয়েছে একটা ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে, এওয়ারনেস তৈরির মাধ্যমে। এখানে (বাংলাদেশ) সরকার কোনো সচেতনতাই তৈরি করতে পারেনি।’
‘প্রথম দিকে আপনাদের মনে আছে প্রচুর আর্মি-টার্মি নামিয়ে দেয়া হলো, তারপর সব তুলে নেয়া হলো। এখন এই যে, ভয়ঙ্কর দ্বিতীয় পর্যায়ে আক্রমণ শুরু হয়েছে এই আক্রমণ মনে হচ্ছে যে, আগের মতো দুর্বল না। আরও বেশি শক্তিশালী। আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করছেন যে, যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদেরকে অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং সেখানে আইসিইউ না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
সরকার জনগণকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ যেটা উদযাপন হচ্ছে তার সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তী আছে। ওদের প্রত্যেকটা ব্যানারে দেখবেন মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন। আমি এখন পর্যন্ত সুবর্ণজয়ন্তীর কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পাইনি। আপনারা দেখছেন কি-না জানি না। কোথাও সুবর্ণজয়ন্তীর সরকারি প্রোগ্রাম দেখতে পাইনি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রোগ্রাম নেই। উল্টো কী করেছে? আমরা যারা কর্মসূচি নিয়েছিলাম সেগুলো ১৭ তারিখ থেকে বন্ধ করে দিয়েছে।’
‘আসলে তাদের কর্মসূচিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। শুধুমাত্র বিদেশি প্রভুদের সন্তুষ্ট করার জন্য, তাদের তুষ্ট করার জন্য তারা সুবর্ণজয়ন্তীর নামে অনুষ্ঠান করছে।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সদস্য সচিব আবদুস সালাম ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এসএস/এএসএম