ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে বিএনপি ছাড়তে পারেন অনেকেই

প্রকাশিত: ১২:০৯ এএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধ, জামায়াতে ইসলামী এবং যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রশ্নে বিএনপি থেকে আরো পদত্যাগের ঘটনা ঘটতে পারে। বৃহস্পতিবার বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগের পর এমন গুঞ্জন এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় শিবিরেই।

রাজনীতিবিদ, রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মুক্তিযুদ্ধ, জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান অস্পষ্ট থাকায় খোদ দলের মধ্যেই দ্বিধা এবং ক্ষোভ কাজ করছে দীর্ঘদিন থেকে। দলটির মধ্যে স্বাধীনতার স্বপক্ষের নেতাদের অনেকেই জামায়াতের সঙ্গে জোট করা নিয়ে শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন।

একই প্রশ্নে দলটি বেশ কয়েকবার ভাঙনের মুখেও পড়ে। বিএনপি ছেড়ে নতুন দল গঠন করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য কর্নেল অলি আহমেদের (বীর বিক্রম) মতো নেতারা। যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রশ্নে সম্প্রতি দলটির মধ্যে মতানৈক্যও দেখা দেয়। প্রকাশ্যে না বললেও জামায়াতের সঙ্গে থাকা নিয়ে বিএনপির অনেক নেতাই ভেতরে ভেতরে উষ্মা প্রকাশ করেন।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামে বিভাজন দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে থাকা দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভূমিকা এবং বক্তব্য নিয়েও। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা সময়ে দেয়া তারেক রহমানের বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির অনেকেই।

অন্যদিকে সরকারের কঠোর অবস্থান এবং বারবার আন্দোলনে গিয়ে নিজেদের ব্যর্থতার কারণে দলটির মধ্যে হতাশা কাজ করছে। বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতেও বিএনপি বিশেষ চাপের মধ্যে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসব বিষয়ে দলের পুনর্গঠন এবং নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ফোরামের নেতারা। ধারণা করা হচ্ছে, এমন বিষয়গুলো আমলে নিয়েই শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগ, যা তার পদত্যাগ পত্রেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধকে বিশেষভাবে স্মরণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লেখা চিঠির একাংশে তিনি উল্লেখ করেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বাস্থ্যগত সীমাবদ্ধতার মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধার মূল্যবোধকে সামনে রেখে দেশ ও জাতীয় কল্যাণে কাজ করার প্রয়াস আমার চিরকাল থাকবে।’

শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগের ঘটনায় বিএনপি আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও আওয়ামী লীগ এই ঘটনাকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বিজয় বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘বিএনপি থেকে বেরিয়ে আসার মিছিল শুরু হয়েছে।’

শমসের মবিনের পদত্যাগের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী, যারা দেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে রাজনীতি করতে চায়, তারা কোনো না কোনোভাবে বিএনপি থেকে বেরিয়ে আসবে।’

উল্লেখ্য, ৪ দলীয় জোট সরকারের সময়ে শমসের মবিন চৌধুরী পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৭ সালে তিনি অবসরে যান।

২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপিতে যোগ দেন শমসের মবিন চৌধুরী। সে সময় চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পান তিনি।

২০০৯ সালে বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে শমসের মবিনকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। দলে যোগ দেয়ার পর থেকেই নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকেন তিনি।

এসএসএস/বিএ 

আরও পড়ুন