যে কারণে রাজনীতি ছাড়লেন শমসের মবিন
কূটনৈতিক মহলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত বিএনপির সহ-সভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী হঠাৎ করেই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও মূল ঘটনা আড়াল করা হচ্ছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে।
যদিও রাজনৈতিক চাপ নয়, স্বাস্থ্যগত কারণেই অবসর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী।এছাড়া সুস্থ হলে ভবিষ্যতে দেশের কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন তিনি।
শমসের মবিন চৌধুরী জানান, তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। তাই দল বদলের রাজনীতি তিনি বিশ্বাস করেননা।
তবে তার এ পদত্যাগের বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য শমসের মবিন চৌধুরী দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের মে মাস থেকেই এ ঘটনার মূল সূত্রপাত। কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তির পর থেকেই সরকারের সঙ্গে তার এক ধরনের ‘আঁতাত’ হয়েছে। বিষয়টি বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহলে স্পষ্ট হলে তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বারবার দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখা না হওয়া প্রসঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরী বলেছেন, চেয়ারপারসন অসুস্থ থাকায় দেখা করতে পারেন নি।
অপর সূত্রে জানা গেছে, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ঢাকা সফরকালে খালেদা জিয়া বৈঠক না করায় দায় দলের একটি পক্ষ শমসের মবিন চৌধুরীর ওপর চাপায়। এছাড়া গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলন চলকালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শমসের মবিন চৌধুরী একটি অডিও ক্লিপ গণমাধ্যমে প্রচার হয়। ওই ক্লিপে তারেক রহমান শমসের মবিনকে ভর্ৎসনা করেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, দলে শমসের মবিন চৌধুরীর মূল্যায়ন না হওয়ায় রাগে ও ক্ষোভে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে শমসের মবিন চৌধুরীর বক্তব্য হচ্ছে, দলে তিনি সব সময় সঠিকভাবে মূল্যায়িত হয়েছেন। যখন যে কাজ করতে চেয়েছেন তখন সে সুযোগ তিনি পেয়েছেন।
অবসরের ঘোষণা দিয়ে শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপি কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন। বলেছেন, শহীদ জিয়ার সেই আদর্শের জায়গায় বিএনপি রয়েছে কি না সেটাও একটা প্রশ্ন।
অন্যদিকে, শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন বিএনিপর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তার পদত্যাগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু।
তবে কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ডিটেইল আমি জানি না। খবরটা আমি শুনলাম। যেহেতু আমি জানি না সেহেতু আমার কোনো মন্তব্যও নেই। শুনেছি স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। স্বাস্থ্যের ওপর তো বড় কিছু নেই। প্রথম হলো জীবন পরে হলো স্বাস্থ্য। আর কি বলবো।
এমএম/এসকেডি/এএইচ/এমএস