ত্রাণের চাল আত্মসাতের ঘটনা দুঃখজনক : রওশন এরশাদ
ত্রাণের চাল আত্মসাতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেছেন, ‘চিকিৎসকদের পিপিইসহ সবধরনের সমস্যার সমাধানের দাবি জানাই। করোনার সময় যারা দেশের স্বার্থে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন সরকার তাদের এবং পরিবারের পাশে থাকবে এই প্রত্যাশা করি।’
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এ সব কথা বলেন তিনি।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘করোনাভাইরাস সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় যত দ্রুত সম্ভব দেশের প্রতিটি উপজেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ভয়াবহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সমগ্র বিশ্ব এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে। নতুন আক্রান্ত আর মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। লকডাউন, আইসোলেশন, শেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে সম্পূর্ণরূপে থমকে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। প্রতিটি দেশ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে পরিত্রাণ পেতে অন্য দেশ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। ভয়ংকর এক কঠিন পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছি আমরাসহ বিশ্ববাসী। এমন অবস্থা দেশের মানুষ কখনও দেখেনি।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকসহ করোনা নিয়ে যারা কাজ করছেন তারা বলছেন, এখনও এর কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। তাই সংক্রামণ এড়ানোর অন্যতম উপায় হলো নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা। সবাই সচেতন হলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। দেশবাসীকে বলব, সরকারের নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে চলুন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন।’
জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক বলেন, ‘এই মহামারির মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারা দেশে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, স্থানীয় প্রশাসন নিরলসভাবে মানুষকে ঘরে রাখতে ও সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। গণমাধ্যম কর্মীরাও প্রতিমুহূর্তের খবর জানাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা শুরু থেকেই লক্ষ্য করেছি, করোনায় আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট, পিপিইসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম পেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হলেও এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে। ইতিমধ্যে একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন। আরও অনেক চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় তাদের সুরক্ষা দিতে না পারলে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তাই অবিলম্বে চিকিৎসকদের পিপিইসহ সব ধরনের সমস্যার সমাধানের দাবি জানাই। করোনার সময় যারা এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন দেশের স্বার্থে সরকার তাদের এবং পরিবারের পাশে থাকবে এই প্রত্যাশা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে একইসময়ে অনেক জনপ্রতিনিধি এই ত্রাণের চাল আত্মসাৎ করছেন এমন ঘটনাও ঘটছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই এই বিষয়টি পুরোপুরি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দেয়ার ব্যবস্থা করা গেলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ত্রাণ পাবে। সরকারের উদ্দেশ্যও সফল হবে।
যারা করোনায় মারা গেছেন তাদের সবার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
এইচএস/এফআর/জেআইএম