আইজিপির প্রতি রিজভীর অনুরোধ
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুলিশি নিরাপত্তার জন্য আইজিপির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ অনুরোধ জানান।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ ২৬ মাস বিনা দোষে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি গুলশানে নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় তার নিরাপত্তার জন্য আইজি বরাবর আবেদন করা হলেও এ বিষয়ে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
রিজভী বলেন, মহামারী ‘নভেল করোনাভাইরাস’ পুরো বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। দুর্যোগের কাছে মানুষের অর্থ, অস্ত্র, ক্ষমতা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সামান্য উঁচু-নীচুর ব্যবধানেও যেখানে মানুষ মানুষকে প্রতিপক্ষ-প্রতিযোগী ভাবতো, আজ মৃত্যুর ভয় সবাইকে জড়োসড়ো করে ফেলেছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের বিভেদহীন দূত হিসেবে প্রতিদিন শত শত মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে নতুন নতুন মানুষের দুয়ারে হাজির হচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা। লাখ লাখ মানুষকে সংক্রমণ আর হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু বিশ্বকে আজ এক কাতারে দাঁড় করিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি সরকারের নীতির কারণেই দেশের করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র ফুটে উঠছে না। ভেতরে ভেতরে সংক্রমণ হতে থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। আজকের পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, গতকাল ২৪ ঘন্টায় করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন। আর সরকারি হিসাবে মারা গেছে একজন। এক্ষেত্রে পরীক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি লকডাউন ও কোয়ারেন্টাইনকে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, হঠাৎই বাড়তে পারে ভয়াবহতা।
রিজভী বলেন, সেনাবাহিনী আজ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা মনে করি-সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এ বিপদ ঠেকানো সম্ভব নয়। তথ্য গোপন করে এই মহামারী এড়ানো যাবে না। তাই সঠিক তথ্য দিয়ে এই রোগের ভয়াবহতা বুঝিয়েই জনগণকে কোয়ারেন্টাইন মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করতে হবে।
রিজভী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেছেন, ‘এই সংকটময় সময়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে আসেনি, সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। বিএনপি দেশের এই দুঃসময়েও জনগণের পাশে নেই। তারা সরকারের সমালোচনা করে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপতৎপরতায় লিপ্ত।’ কাদের সাহেবকে আমি বলতে চাই-গণতন্ত্রকে যাদুঘরে পাঠিয়েছেন বলেই সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরাকে অপতৎপরতা হিসেবে অভিহিত করছেন। সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে সমালোচনা করাকে প্রকৃত গণতন্ত্রে অপতৎপরতা হিসেবে গণ্য করে না। আপনাদের গণতান্ত্রিক মানস নেই বলেই সমালোচনা শুনলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এই মহাদুর্যোগে যখন মানুষ জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে তখন ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্য বিভাজন ও বিভেদেরই প্রতিফলন। কী কারণে যেন আপনারা সমালোচনার শঙ্কায় অস্থির থাকেন।
কেএইচ/এনএফ/এমকেএইচ